খবরে প্রকাশ, 'নামসর্বস্ব হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান আদিবাসী পার্টিসহ কয়েকটি সংগঠনের বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি) গঠনের দুই দিন পর আরও একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। নতুন এই দলটির নাম বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)'।(১) হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন সদস্য যদি নিজের অধিকার ও ক্ষমতার জন্য লড়াই করেন, সেটা আসলে দিন শেষে নিজ জাতি বা সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্যই লড়াই। এর মধ্যে প্রগতিশীলতা যেমন নাই, সাম্প্রদায়িকতাও নাই। 'নিজের সম্প্রদায়ের অধিকার চাইতে গিয়ে অন্যের অধিকার অস্বীকার করার নাম হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা'।(২) সেই হিসেবে বাংলাদেশে দুটো নতুন দলের আত্মপ্রকাশকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি আমরা। নতুন দল নতুন কোন বয়ান হাজির করতেছেন নাকি পুরাতন বয়ান নতুন পরিভাষায় হাজির করতে চাইতেছেন সেটাই দেখার বিষয়। বীরেন্দ্র চন্দ্র অধিকারী এই দলটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘যে ধর্মেরই হোক সবার মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। যারা বঞ্চিত হন, তারাই মাইনরটি। যে জনগোষ্ঠী নির্যাতিত হবেন, আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই এই দলটির আদর্শ।’ (১)
নিজে সাম্প্রায়িক হয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা যাবেনা। এই আলাপ এইজন্য তোললাম, নতুন এই দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে শ্যামল কুমার রায় এবং সুকৃতি কুমার মণ্ডল এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী ও নির্বাহী সভাপতি ছিলেন। জাতীয় হিন্দু মহাজোট কি অসাম্প্রদায়িক ছিল?
যাই হোক, বিএমজেপি'র স্লোগান হচ্ছে- 'মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বাঁচাও, জয় মানবতার জয়'।(১) অর্থাৎ, এর মধ্যে আওয়ামীলীগের মুক্তিযুদ্ধও আছে, বিএনপি'র দেশ বাঁচাও আছে। চিন্তার ব্যাপক কসরত করেই মনে হয় এই লাইন ঠিক করছেন নতুন দলের নেতারা। এতে বুঝা যাইতেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের এলিটরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি কোনটাতেই আর আস্থা রাখতে পারতেছেন না।
ভাল, এইটা ভাল হইছে। আওয়ামীলীগকেও আর 'অসাম্প্রদায়িক' হওয়ার ভান করতে হবে না, বিএনপিকেও জোর করে আর 'সাম্প্রদায়িক' প্রমাণ করা লাগবেনা। মাঝখানে লিম্বতে আটকাইয়্যা গেল কমিউনিস্ট পার্টিস। কারণ তাঁরা প্রচলিত কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না। তাঁদেরকে এখন আলাদা স্বতন্ত্র সম্প্রদায় হিসেবেই রাজনীতি চালাইয়া যেতে হবে মনে হচ্ছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদ সহ আরো কিছু সাম্প্রদায়িক প্রেসার গ্রুপের দাবী ছিল তাঁদেরকে ৬০টি আসন দিতে হবে। আশাকরি, এখন থেকে আর এসব অসাংবিধানিক দাবী দাওয়া তাঁরা তুলবেন না। নিজেরা দল করে মানুষের কাছে যেয়েই তাঁরা নির্বাচিত হয়ে আসবেন। অন্তত কোটা নির্ধারিত করে এমপি হবার মত উপনিবেশিক আবদার তাঁরা আর করবেন না।
বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া কংগ্রেসি রাজনীতি ও পর্দার আড়ালে থাকা আরএসএস এর রাজনীতির ধারা নিয়ে সরাসরি মাঠে নেমে আসার জন্য (বিজেপি) এবং (বিএমজেপি)কে স্বাগতম। এতে করে আমাদের বুঝতে সুবিধা হয় who is who?
নোটঃ
(১)প্রথম আলো, বিজেপির পর এবার বিএমজেপি, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭,https://goo.gl/2kMVqY
(২) মূলধারা বাংলাদেশের মতে সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা হচ্ছে- ''যে গোষ্ঠী চেতনা বৃহৎ সমাজকে পাশ কাটিয়ে, ক্ষুদ্র গোষ্টিগত স্বার্থে অন্য ধর্ম, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের কেবল বিরোধিতাই নয় বরং অন্যের অধিকার দিতে অস্বীকার করে এবং ক্ষতি করতে করতে নিযুক্ত থাকে। পাশাপাশি যে চেতনা বা বিশ্বাস অন্য সম্প্রদায় বা ধর্ম বিশেষের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা কিংবা অন্য জাতির ঐতিহাসিক ও সম্মানিত চরিত্রকে হীন বা বিকৃত রূপে উপস্থাপন করতে নানাবিধ প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকে তাকেই সাম্প্রদায়িকতা বলে।অন্যায় কাজে স্বগোত্র-স্বজাতির পক্ষে দাঁড়ানোও সাম্প্রদায়িকতার অন্তর্ভুক্ত। যে বা যারা এই চেতনার লালন, পালন, বাস্তবায়ন ও প্রচার চালায় তারাই সাম্প্রদায়িক।'' (দেখুন বিস্তারিত; http://www.muldharabd.com/?p=1904
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]