চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বরকলের ঠেগামুখ পর্যন্ত ৩২৭.৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে অনেকদুর এগিয়েছে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এলজিইডি। ঠেগামুখ স্থল বন্দরের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ স্থাপনের দুই ভাগে এই পথ নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে একটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রাজস্থলি হয়ে থেগামুখ পর্যন্ত যার দূরত্ব ১৮৪.৯৭ কিঃমিঃ এবং রাঙামাটি হয়ে একটি বহুমাত্রিক পথ নির্মাণ করা হবে যার দূরত্ব ১৪২.৮৮ কিঃমিঃ। সূত্র জানায় সড়কটি নির্মাণে ইতোমধ্যে ত্রিমুখি জরিপ সম্পন্ন করেছে বিশ্বব্যাংক ও এলজিইডি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন এই সড়ক প্রকল্পটি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের নিয়োজিত পরামর্শক সংস্থা ও এলজিইডি যৌথভাবে এই জরিপ পরিচালনা করে। সড়কটি মূলত ঠেগামুখ স্থল বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি রপ্তানীর ক্ষেত্রেও সড়কটি অসামান্য অবদান রাখবে বলে মত প্রকাশ করেছে জরিপকারী সংস্থা। তারা জানান, সড়কটি নির্মাণ শেষ হলে দেশের অর্থনীতি তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের অনগ্রসর জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আসবে। এই রুট নির্মাণ শেষ হলে প্রতি বছর গড়ে জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ৬%।
সড়কটির বিষয়ে সরেজমিনে জরিপ সম্পন্ন করার পর ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রতিবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি এলজিইডির ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। জরিপের বিষয়ে অবহিত করা এবং স্থানীয় জনগণের মতামত ও অংশ গ্রহণের জন্য গত গতমাসের ১৭ ও ১৮ তারিখ বিলাইছড়ি এবং রাজস্থলীতে পৃথক দু’টি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালার পেজেন্টেশনেও উপরোক্ত তথ্যগুলো তুলে ধরেন বিশ্ব ব্যাংক নিয়োগকৃত পরামর্শক সংস্থা।
জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈঠকে জানানো হয় সড়কটির কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে এমন লোকদের মতামত গ্রহণ করা হলে তারা স্থানীয়রা এ বিষয়ে একমত পোষন করেছেন। প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুযায়ী স্থানীয়দের ক্ষতিপুরণ ও পুণর্বাসন করা হবে। পুণর্বাসন বাবদ স্থানীয়রা ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার কথা জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয় তারা কেউ ফলের বাগান করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে, আবার কেউ জানিয়েছে তাদেরকে মাছ ধরার জন্য নৌকা-বোট তৈরি করে দিতে হবে। অনেকে আবার তাদেরকে ব্যবসা করার জন্য দোকান তুলে দেওয়ার দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভৌগলিক কারনে বাংলাদেশের অবস্থান আঞ্চলিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। সে জন্য দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাই এই সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ও পরিবহণ খাতে আঞ্চলিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে, অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বাণিজ্য ও পরিবহন খাতের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সম্ভাব্য বিনিয়োগের মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মূলতঃ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল তথা সীমান্ত এলাকায় রাঙামাটির ঠেগামুখ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত যোগাযোগ তৈরির কারিগরী, পরিবেশ, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পথ চিহ্নিত করা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন সিএইচটি টাইম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই সড়ক নির্মাণে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে সড়ক নির্মাণ শেষ হলে পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে তেমনি আর্থ-সামাজিক অবস্থারও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
প্রকল্প সম্পর্কে স্থানীয়দের নিজ এলাকায় গিয়ে ব্যক্তিগত মতামত গ্রহণের পর তার সার সংক্ষেপ এবং প্রকল্পের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে স্থানীয়দের মাঝে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদানের লক্ষ্যেই বিলাইছড়ি রাজস্থলী উপজেলায় পৃথক দু’টি উম্মুক্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিসহ তৃণমুল পর্যায়ের সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিশ্ব ব্যাংকের মাধ্যমে এলজিইডি কর্তৃক নিযুক্ত বাংলাদেশ ও ভারতের দুইটি পরামর্শক কমিটির চারজন সদস্য স্থানীয় ষ্টেক হোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করেন। জরিপের বিষয় তারা ইতোমধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের নিকট লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
গত ৮ই আগষ্ট রাঙামাটির বিলাইছড়ি ও ৯ই আগষ্ট রাজস্থলী উপজেলায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, রাঙামাটিতে পরিচালিত জরিপ এবং বিশ্লেষণ থেকে গৃহিত পথরেখা মোতাবেক প্রাথমিকভাবে স্থলপথে চারটি রুট চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেগুলো হলো, (১) রাজস্থলী-বিলাইছড়ি-জুরাছড়ি-বরকল-থেগামুখ পর্যন্ত ১২৩.৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, (২) লংগদু উপজেলার বগাচত্বর-বরকল-থেগামুখ পর্যন্ত ৫০.২৫ কিলো মিটার (৩) সাজেক-মাঝিপাড়া-দোকানঘাট-হরিণা-থেগামুখ পর্যন্ত ৯৭.১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং (৪) ব্যাংছড়া (কাপ্তাই)- চিৎমরম-চাকুয়াপাড়া-ভাঙ্গামুরা-বিলাইছড়ি-শিলছড়ি-মিটিঙ্গাপাড়া (জুড়াছড়ি)-বরকল-ছোট হরিণা-থেগামুখ পর্যন্ত সর্বমোট ১০৬.১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য।
পাশাপাশি নৌ-পথসহ বহুমাত্রিক পথ হিসেবেও চারটি রুট বিবেচনায় রাখে পরামর্শক সংস্থাগুলো, সেগুলো হলো (১) রাঙামাটি-ছোট হরিণা (জলপথ ৬৩ কিলোমিটার) এবং ছোট হরিনা-থেগামুখ পর্যন্ত (স্থল পথ ৭.৯৮কি:মি:) সর্বমোট পথ ৭০.৯৮ কিলোমিটার, (২) রাঙামাটি-বরকল (জলপথ ৩৭.৫ কি:মি:) এবং বরকল-থেগামুখ(স্থলপথ ২৩.৩০ কি:মি:) সর্বমোট ৬০.৮০ কিলোমিটার। (৩) কাপ্তাই-বরকল (জলপথ ৬৪.৮১ কি:মি:) এবং বরকল-থেগামুখ (স্থলপথ ২৯.৩০ কি:মি:) সর্বমোট ৯৪.১১ কিলোমিটার। (৪) কাপ্তাই ছোট হরিণা (জলপথ ৮৯.৬২ কি:মি:) এবং ছোট হরিণা-থেগামুখ(স্থলপথ ৭.৯৮ কি:মি:) সর্বমোট স্থলপথ হলো ৯৭.৬০ কিলোমিটার।
উপরে বর্ণিত ৮টি সম্ভাব্য রুটের মধ্যে একটি স্থলপথ ও একটি বহুমাত্রিক পথ বাছাই করা হয়েছে জানিয়ে মতবিনিময় সভায় বলা হয়, পথ নির্বাচনে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়, সেগুলো হলো- পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব, জনবসতি, ভূমি অধিগ্রহণ, রাস্তা উন্নয়ন ব্যয়, ভ্রমণ সময়, সুবিধাপ্রাপ্ত জনসংখ্যার হার ইত্যাদি।
মতবিনিময় সভায় পরামর্শক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, উক্ত আটটি পথের মধ্য থেকে ২টি পথ সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তারমধ্যে চারটি স্থলপথের মধ্যে নির্বাচিত হয়েছে রাজস্থলী-বিলাইছড়ি-জুড়াছড়ি-বরকল-থেগামুখ পর্যন্ত রুটটি যার দৈর্ঘ্য হলো ১২৩.৫৪ কিলোমিটার। অন্যদিকে চারটি বহুমাত্রিক পথের মধ্যে নির্বাচিত করা হয়েছে, রাঙামাটি-ছোট হরিণা পর্যন্ত ৬৩ কিলোমিটার জলপথসহ ছোট হরিণা থেকে ঠেগামুখ পর্যন্ত ৭.৯৮কিলোমিটার স্থলপথ রুটটি। এই পথের মোট দৈর্ঘ্য হলো-৭০.৯৮ কিলোমিটার।
প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত স্থলপথ সম্পর্কে জানানো হয় (১) রাজস্থলি-বিলাইছড়ি (৪৯.১০০ কিঃমিঃ: সবুজ পাহাড়ী ঢালে ৬৭৪.৬৭ মিঃ (গড় ক্যারিজওয়ে ৪.৪ মিঃ) পিচঢালা পথ এবং বাকিটা মাটির রাস্তা পাওয়া গিয়েছে। এতে প্রায় ৮টি ব্রিজ/কালভার্ট খুজে পাওয়া গিয়েছে এবং প্রায় ৩২২৬.৬৮ মিঃ এর মত অসংযুক্ত ফাঁকা অংশ রয়েছে। হিসেব করে দেখা গিয়েছে রাজস্থলি-বিলাইছড়ি অংশে ১৪টি ব্রিজ/কালভার্ট লাগবে। (২) বিলাইছড়ি-জুরাইছড়ি (২৯.৪৩৬কিঃমিঃ)ঃ এর মধ্যে প্রায় ১০৫৩.৭২ মিঃ হেরিং বোন বন্ড রাস্তা রয়েছে যার প্রশস্থতা ৩.২১৭ মিঃ। এই অংশে ৬টি ব্রিজ/কালভার্ট দরকার হবে। (৩) জুরাইছড়ি-বরকল (৬.৮৪৯ কিঃমিঃ)ঃ ৩টি ব্রীজ খুজে পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মোট ৭টি ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণের প্রয়োজন হবে বলে হিসেব করা হয়েছে। সবুজ পাহাড়ী পথের পুরোটায় পায়ে হাটা পথ রয়েছে। (৪) বরকল-ছোটহরিণা (২১.২৭৭ কিঃমিঃ)ঃ এই অংশে ১১৮৭.৪০ মিঃ হেরিং বোন বন্ড রাস্তা পাওয়া গিয়েছে যা ৩ মিঃ প্রশস্ততা এবং ১৪টি ব্রিজ/কালভার্ট পাওয়া গিয়েছে।
এই সেকশনের বাকি অংশ কাচা রাস্তা এবং প্রাথমিক হিসেবে ২২টি ব্রিজ/কালভার্ট দরকার পড়বে। (৫) ছোটহরিনা-থেগামুখ (৮.০৮৯ কিঃমিঃ) ঃ এই সেকশনে ১৩৪.১৯ মিঃ হেরিং বোন বন্ড রাস্তা পাওয়া গিয়েছে যা খুবই সরু এর প্রশস্থতা ১.৫ মিঃ এবং এই সেকশনে ২টি ব্রিজ খুজে পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক হিসেবে এখানে আরও ৩টি ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজন হবে।
এ ছাড়া প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে বহুমাত্রিক সম্পর্কে জানানো হয় ঃ রাঙামাটি-ছোটহরিণা (জলপথ ৬৩ কিঃমিঃ) এবং ছোটহরিণা-থেগামুখ (স্থলপথ ৮.০৮৯ কিঃমিঃ)। সর্বমোট পথ ৭১.০৮৯ কিঃমিঃ। রাঙামাটি-ছোটহরিণা (জলপথ ৬৩ কিঃমিঃ)ঃ এই নৌপথটি রাঙামাটি থেকে শুভলং, বরকল, ভূশনচর হয়ে ছোটহরিণা গিয়েছে। এই নৌপথের দূরত্ব প্রায় ৬৩ কিঃ মিঃ। রাঙামাটি থেকে বরকল পর্যন্ত ৩৭.৫ কিঃমিঃ পথ ছোট লঞ্চ এবং নৌকার জন্য সারাবছর নাব্য। কিন্তু বড় মালবাহী জাহাজের জন্য এই অংশে ড্রেজিং করার প্রয়োজন হবে।
বরকল থেকে ছোটহরিণা পর্যন্ত পথ শুধুমাত্র বর্ষাকালে ৩-৪ মাস নৌ চলাচলের উপযুক্ত থাকে। এই অংশে (২৫.৫ কিঃমিঃ) প্রচুর পরিমাণ মাটি ড্রেজিং করতে হবে। ছোটহরিণা-থেগামুখ (৮.০৮৯ কিঃমিঃ)ঃ এই সেকশনে ১৩৪.১৯ মিঃ হেরিং বোন বন্ড রাস্তা পাওয়া গিয়েছে যা খুবই সরু এর প্রশস্থতা ১.৫ মিঃ এবং এই সেকশনে ২টি ব্রিজ খুজে পাওয়া গিয়েছে।
পরামর্শক ও জরিপ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উক্ত প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যেই সড়ক বিভাগ ও অন্যান্য গৌণ উৎস থেকে প্রাপ্ত সকল ট্রাফিক ডাটা পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনটি চিহ্নিত স্থান যথা-ঘাগড়া, চন্দ্রঘোনা এবং বাঙ্গালহালিয়াতে দুই দিনের শ্রেণীবদ্ধ ট্রাফিক গণনা সম্পাদন করা হয়েছে। এই ডাটার উপর নির্ভর করে ভিত্তি বছরের ট্রাফিক অনুমান রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদি জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার, পরিবহণ স্থিতিস্থাপকতা এবং ভিত্তি বছরের ট্রাফিক অনুমান হিসেবে রেখে নিম্ন, মধ্যম এবং উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য ২০৪০ সাল পর্যন্ত ট্রাফিক অনুমান তৈরী করা হয়েছে। মাঝারী জিডিপি বৃদ্ধির জন্য ট্রাফিক অনুমান অর্থনৈতিক মূল্যায়নের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
বহুমাত্রিক পথ-এর ক্ষেত্রে ভিত্তি বছরের ট্রাফিক অনুমান রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। আর মাঠ পর্যায়ের জরিপ থেকে প্রাপ্ত ডাটা এবং রাঙামাটি জেলার স্থানীয় সরকার প্রশাসন ও লঞ্চ মালিক সমিতির সাথে আলোচনায় প্রাপ্ত তথ্য থেকে। রিপোর্ট তৈরীতে প্রতি বছরের গড় জিডিপি বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৬%।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে আমুল পরিবর্তন আনতে সক্ষম পাহাড়ের এই কানেক্টিবিটি সড়কটির জন্য সওজ এর স্ট্যান্ডার্ড মেনে ৭.৩ মিঃ ক্যারিজওয়ের দুই লেন বিশিষ্ট পিচঢালা পথ নির্মাণ করা হবে। নকশাকরণ প্রক্রিয়ার সময় গ্রহণযোগ্য গ্রাডিয়েন্ট-এর জন্য রাস্তার দৈর্ঘ্য আরো হ্রাস পেয়ে ১০৯.৬৭ কিঃমিঃ এবং বহুমাত্রিক রাস্তার স্থলপথ অংশের দৈর্ঘ্য কমে ৭.৩৭ কিঃমিঃ হয়েছে। সর্বমোট দৈর্ঘ্য হয়েছে ৭০.৩৭ কিঃমিঃ।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রাজস্থলি হয়ে থেগামুখ পর্যন্ত দূরত্ব ১৮৪.৯৭ কিঃমিঃ এবং রাঙামাটি হয়ে বহুমাত্রিক পথের দূরত্ব ১৪২.৮৮ কিঃমিঃ। বিদ্যমান ব্রিজগুলোর জায়গায় নতুন ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাবনা আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্রিজগুলো হবে আরসিসি এবং পিসিসি ধরনের। একইভাবে স্ল্যাব কালভার্টেরও প্রস্তাবনা আছে। ড্রেনের নকশা করা হয়েছে এবং পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সেগুলো নির্মাণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। তার মধ্যে আরসিসি ব্রিজ- ১৮টি, পিসিসি ব্রিজ- ২২টিসহ সর্বমোট-৪০টি।
আরসিসি ব্রীজ রয়েছে- ১৫ মিটার ৮টি, ২০ মিটার ৪টি, ২৫ মিটার ২টি, ৪৫ মিটার ৩টি, ৬৩ মিটার ১টি। অপরদিকে পিসিসি ব্রীজ রয়েছে-৩০ মিটার ৭টি, ৩৫ মিটার ৭টি, ৯০ মিটার ১টি, ১১৪ মিটার ১টি, ১৩০ মিটার ১টি, ২৮৮ মিটার ১টি, ১৬০ মিটার ১টি, ১৭৫ মিটার ১টি, ২৩১ মিটার ১টি, ১৪২ মিটার ১টি। এছাড়াও উক্ত রুটে কমপক্ষে ৩ মিঃ গভীরতা এবং ৬১ মিঃ প্রশস্থতা করে ড্রেজিং করতে হবে।
রাঙামাটি থেকে বরকল (৩৭.৫ কিঃমিঃ) যা ১.১৮ মিলিয়ন ঘনমিটার এর সমান, বরকল থেকে ছোটহরিণা (২৫.৫ কিঃমিঃ) যা ৭.০৮ মিলিয়ন ঘনমিটার এর সমান। প্রকল্পের সুপারিশ মালায় উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য এলাকায় সড়ক ধ্বসের সম্ভাবনা থাকে। তাই ধ্বস ঠেকাতে প্রয়োজনীয় নির্মাণ কাজ যেমন সড়ক রক্ষা দেয়াল নির্মাণ করতে হবে। এলাকাভেদে সড়ক রক্ষা দেয়ালের উচ্চতা ৪ মিটার থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
অতীব প্রয়োজনীয় এই প্রকল্পের জন্য ১১৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে আর এতে ৫৬৪টি পরিবার এর আওতায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে ১৫৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ২৪১টি কৃষি জমির বাগান, ১০টি সাংস্কৃতিক অবকাঠামো যার মধ্যে (৩টি মসজিদ, ৩টি মন্দির, ৪টি বিদ্যালয় রয়েছে)এছাড়াও সর্বমোট ৩২টি জলাশয়/ পুকুর এর আওতায় পড়বে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]