রাবেতা মডেল কলেজের উন্নয়ন হলে, রাবেতা মডেল কলেজ ডিগ্রি কলেজে রুপান্তরিত হলে লাভবান/উপকৃত হবে কারা? দুদিন যাবৎ এই প্রশ্নের উত্তর খুজেছি। যদিও উত্তরটা খুব সোজা-সাপটা। কেননা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন এবং উচ্চ শিক্ষা মানসম্পন্ন হলে এলাকার সর্বস্থরের জনগণই উপকৃত হয়। তবুও আমার সময় লেগেছে। কারন এই প্রতিষ্ঠানের সাথে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়টা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্ন রয়েছে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলী, তার পরিবার এবং ইবনেসিনা ট্রাস্টের কর্তৃত্ব্য নিয়ে। আমার অনেকেই রাবেতা মডেল কলেজ নিয়ে জামায়াত শিবিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে কিংবা লোকমুখে শুনে জনগুরুত্ব্যপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানের বিরোধীতা করছি, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি। আসলে আপনার আমার এই অভিযোগে এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিমুখ মনোভাব কিংবা নিজের অজ্ঞতা বশত নীরবতা কতটুকু যৌক্তিক? আমি মনে করি সম্পুর্ন অযৌক্তিক।
রাবেতা হাসপাতাল সৌদি ট্রাস্ট "রাবেতা আল আলমে ইসলামী"র মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে বৈদেশিক এই ট্রাস্ট পর্যাক্রমে এলাকার স্বার্থে রাবেতা এয়াতিমখানা, স্কুল এবং সর্বশেষ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। আর যার মাধ্যমে সৌদি সংস্থাটি এই কাজ করেন তিনি হচ্ছেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। সেই সময় প্রতিষ্ঠানটির ভূমি মীর কাসেম আলীর নামে বন্দোবস্ত ছিলো। সেটা ছিলো গত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকা কালে। যখন মীর কাসেম আলী বিতর্কিত হলো, গ্রেফতার হলো তখন এই ভূমির বন্দবস্থি পরিবর্তন করে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নামে করা হয়েছে। সৌদি সহায়তা বন্দ হয়ে গেলে এক সময় কলেজের আয় খুব কম ছিলো। শিক্ষকদের বেতন সংকটে ভূগছিলো প্রতিষ্ঠানটি। সেই সময় মীর কাসেম আলী ইবনে সিনা ট্রাস্টের মাধ্যমে বেতন সরবরাহ করতো। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের আর্থিক যোগানদাতা হিসেবে ইবনে সিনা ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিলো।
সুতরাং রাবেতা মডেল কলেজ জামায়াত সৃষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান নয়, এটি সৌদি ট্রাস্ট রাবেতা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। আর রাবেতা নামটি জামায়াতের স্মৃতি চিহ্ন কিংবা কোন যুদ্ধাপরাধী হতে সৃষ্টি হয়নি, এটা এসেছে সৌদি ট্রাস্ট হতে।
পার্বত্য এলাকার মধ্যে এক সময় সর্বোচ্চ অশিক্ষিত এলাকা ছিলো লংগদু উপজেলা। এদিকে অধিক বাঙ্গালী বসতী থাকার কারনে পশ্চিমা বড় বড় বৈদেশিক দাতা সংস্থাগুলো এই উপজেলার উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি দেয়নি। যদিনা সৌদি ট্রাস্ট রাবেতা এলাকায় কাজ না করতো তবে হয়তো লংগদু উপজেলার ভাগ্য পরিবর্তন হতো না। বর্তমানে উপজেলার ঘরে ঘরে এসএসসি, এইচএসসি পাশ যুবক, যুবতী রয়েছে তারা কিন্তু অধিকাংশই রাবেতার প্রডাক্ট। সামরিক, আধাসামরিক বাহিনীতে, বড় বড় অফিসে চাকরি যারা করছে তারা সবাই রাবেতা হতে শিক্ষা নিয়েছে। এছাড়া আমরা দেখছি রাঙ্গামাটি জেলা হতে বিভিন্ন কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স যারা পাচ্ছে তারা অধিকাংশই এই রাবেতা মডেল কলেজের ছাত্র। লংগদু উপজেলার যদি উচ্চ শিক্ষিতদের গননা করা হয় তবে ৯৯% পাওয়া যাবে রাবেতা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কিংবা কলেজের ছাত্র।
সুতরাং এটা বলা যায় রাবেতা মডেল কলেজ হচ্ছে লংগদু উপজেলার মেরুদন্ড। সুতরাং স্বাভাবিক নিয়মে একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে আমি এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের স্বপক্ষে। ইতোমধ্যে সরকার কলেজটি এমপিও ভূক্ত করেছে। শিক্ষকরা পাচ্ছে সরকারি বেতন। এদিকে ছাত্র ছাত্রী বৃদ্ধি পাওয়ায় আয়ও বেড়ে দাড়িয়েছে দ্বিগুন। অর্থাৎ কলেজটি এখন পরিচালনার দিক হতে স্বনির্ভর। যেহতু কলেজটি স্বনির্ভর সেহতু এলাকার দরিদ্র মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে কলেজটি ডিগ্রি কলেজে রুপান্তর করার দাবি আরও দশ বছর আগেরই। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় যে কলেজ জাতীয়করণ হবে তাতে রাবেতা মডেল কলেজের বিকল্প নেই।
তবে হাঁ, আপনারা কলেজ পরিচালনা কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। তার উত্তরও কিন্তু আমি পেয়েছি। কলেজ পরিচালনা করবে এমন যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি ইতোপূর্বে লংগদু উপজেলায় ছিলো না। বর্তমানে এলাকায় শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পেলেও তারা কিন্তু কলেজ কমিটিতে আশার যোগ্য নয়। সুতরাং কলেজ কমিটির বড় বড় পদ উপজেলার বাইরে হতে নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু, যেহতু এলাকার প্রতিষ্ঠান এটি সেহতু বর্তমানে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা এই কমিটি সাজানো হয়েছে। যেখানে রয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল বারেক সরকার নিজেই। সুতরাং কলেজ যে জামায়াত পরিচালিত এটা বলার অবকাশ কিন্তু এখন আর নেই।
সুতরাং পরিশেষে বলবো এই কলেজ জামায়াত শিবিরের নয়, এই কলেজ লংগদু উপজেলার। কেউ যদি ব্যক্তি স্বার্থে মিথ্যে অজুহাত এনে কলেজটির উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায় তবে সে চরম ভূল করবে। কেননা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে রাজনীতি তাকে তার পথ হতে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে। এটা জনগনের সাথে শুধু ধোকাবাজি নয়, ধোকাবাজী উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিদের সাথে। জনগন কিছু না বুঝলেও উচ্চ শিক্ষত লোকেরা কিন্তু অবুজ নয়। সুতরাং যে বা যারা এটার বিরোধীতা করছেন তাদের অচিরেই ফিরে আসা উচিত। যদি কোন সমস্যা থাকে তবে তা উপজেলার স্বার্থে ঘরোয়া ভাবে মিটিয়ে ফেলা উচিত।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]