‘মায়ের অনেক ক্ষমতা! এই মুহূর্তে যদি বৃষ্টি আসে তাহলে তিনি তা তাড়িয়ে দিতে পারেন। আবার চাইলে বৃষ্টি নামাতেও পারেন!’ এমনটাই বলছিলেন খাগড়াছড়ির কথিত সাধু শান্তি দেবীর অনুসারী জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরা।তার ভক্তদের কথায়, ‘স্বঘোষিত এই সাধক এতটাই ‘ক্ষমতাধর’ যে, চাইলেই নাকি তিনি সাপ হয়ে যেতে পারেন! তার কথায় নাকি বৃষ্টি নামে, নিষেধ করলে থেমে যায় বর্ষণ ধারা। মানুষের এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান কিনা দিতে পারেন না সাধু শান্তি দেবী!’ পাহাড়ের সহজ-সরল মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বৌদ্ধ পাড়ায় আস্তানা গেড়েছে পাশের দেশ ভারত থেকে আসা কথিত সাধক শান্তি কালী ত্রিপুরা। পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বৌদ্ধপাড়ার শিব মন্দির। মন্দিরের প্রবেশ মুখেই বাঁশের গেইট। গেইটের প্রবেশ মুখে বসানো হয়েছে প্রহরা। মন্দিরের সামনে সামিয়ানার নিচে পৃথক তিন সারিতে বসে আছে শতাধিক ভক্ত-অনুসারী। কেউ কেউ ভোরের আলো ফোটার আগ থেকেই এখানে এসেছেন। একটু দূরেই দুই কিশোর প্রস্বাদ বিবতরণ করছে। মন্দিরের বাইরে নানা পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্টল। প্রথম দেখাতে যে কারোর মনে হবে এখানে বুঝি ‘মেলা’ বসেছে। কিন্তু না।
পাহাড়ের সহজ-সরল মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বৌদ্ধপাড়ায় আস্তানা গেড়েছে পাশের দেশ ভারত থেকে আসা কথিত সাধক শান্তি কালী ত্রিপুরা। জন্মগতভাবে পুরুষ হলেও পরনে লাল থামি, গলাভর্তি মালা, মাথায় ঝুটি বাঁধা, হাতে শঙ্খের চুড়ি। কখনও আবার পুরুষ বেশ ধারণ করেন কথিত এই সাধক। মঙ্গলবার সরেজমিনে পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালার অদূরে বৌদ্ধপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কথিত সাধু শান্তি কালী ত্রিপুরা আস্তানায় রোগমুক্তির আশায় পাহাড়ি-বাঙালি হাজারও নারী-পুরুষের ভিড়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলার ছেরামি থানার রামকৃষ্ণ গ্রামের বাসিন্দা শান্তি কান্তি দেববর্মা। নিজেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আরেক সাধু শান্তি কালির অনুসারী হিসেবে নিজের নাম রেখেছেন শান্তি কালি দেব বর্মা। প্রায় দেড় মাস আগে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বৌদ্ধপাড়া গ্রামে এসেছেন। পরে স্থানীয়দের সরলতার সুযোগ নিয়েই আস্তানা গেড়ে বসে এই মন্দিরে। ভারতীয় নাগরিক এই সাধুর এমন কর্মকাণ্ডে ইতোমধ্যে জেলাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসার আড়ালে কথিত সাধকের অনুসারীরা সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো অজুহাত তোলার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।
কেউ প্যারালাইসিস, কেউ কেউ প্রতিবন্ধী, আবার কারও কোমর ব্যথা। অনেকে আবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সন্তানকে সুস্থ করার জন্য এসেছেন সাধুর কাছে। তবে সাধুর চিকিৎসায় রোগমুক্তি হয়েছে কিনা এমন তথ্য কেউ দিতে পারেনি। ক্যান্সার থেকে শুরু করে সব রোগের চিকিৎসা হয় এক ফুতে। শুধু তাই নয়, তিনি চাইলেই নাকি সাপ হয়ে যেতে পারেন। তার কথায় নাকি বৃষ্টি নামে, আবার তার কথাতেই থেমে যায় সেই বৃষ্টি। এমনটাই দাবি করেছেন কথিত সাধু শান্তি কালি ত্রিপুরার অনুসারী জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরা। তার মতে মায়ের (কথিত সাধু শান্তি কালী ত্রিপুরা) অনেক ক্ষমতা। স্থানীয় অনুসারীদের ছড়িয়ে দেয়া এমন প্রচারণায় বিশ্বাস করে রোগমুক্তির আশায় প্রতিদিন সহজ-সরল মানুষ ভিড় করছেন এখানে। শুধু দীঘিনালার সহজ-সরল মানুষই নয়, রোগমুক্তির আশায় প্রতিদিনই খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটিসহ দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসছেন রোগীরা।
রাঙ্গামাটির বাঘাইহাটের গুলকমা ছড়া এলাকা থেকে এসছেন স্নেহ কুমার চাকমা। শরীরের প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় স্ত্রী মিলেছ চাকমা তাকে নিয়ে এসেছেন সাধুর কাছে। তবে এখনও কোনো পরিবর্তন হয়নি। সাধু বলছেন সুস্থ হয়ে যাবে। আমি একদিনের সাধনায় মহাদেবসহ চৌদ্দ দেবতার ক্ষমতা অর্জন করেছি এমনটা উল্লেখ করে বহুরূপী শান্তি কালী ত্রিপুরা বলেন, ভগবান আমাকে মানব সেবার জন্য এখানে পাঠিয়েছেন। এমন কোনো রোগ নেই যার চিকিৎসা আমি দিতে পারব না। কথিক সাধু ধর্মকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছেন মন্তব্য করে দীঘিনালা উপজেলা সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিউটন মহাজন বলেন, প্রতিনিয়ত এখানে ধর্মের অবমাননা করা হচ্ছে। ভণ্ড সাধুকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন দীঘিনালা সনাতন ছাত্র-যুব পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল চৌধুরী।
বাংলাদেশে প্রবেশের বৈধতাসহ সব বিষয় গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে নিশ্চিত করে দীঘিনালা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, সাধুর বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আধুনিক চিকিৎসার যুগে মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই সাধু মানুষকে প্রতারিত করে যাচ্ছে মন্তব্য করে দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ-খবর নিয়ে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]