বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টিভিতে প্রায়ই দেখি উপজাতিদের বিশেষ করে চাকমাদের কিছু সংগঠন প্রায়ই অভিযোগ করে যে, সরকার প্রায় ২২-বছরেও শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেনি। এ জন্য তারা অস্ত্র হাতে নেয়ার পক্ষে যুক্তি দেন ও আমাদের সেনাদের পাহাড় থেকে তাড়ানোর নানাবিধ যু্ক্তি প্রদর্শন করে থাকে। বাঙালিরা অনেকেই বিষয়টাকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে না। কিন্তু আপনারা জানেন কি, শান্তিচুক্তির আগে একটা মাত্র সংগঠন (জনসংহতি সমিতি) অস্ত্র হাতে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। কিন্তু শান্তি চুক্তির পর বর্তমানে পাহাড়ে উপজাতিদের যুদ্ধবাজ সংগঠন হচ্ছে ৩টি। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত এ ৩ গ্রুপের ১৮শ’ সন্ত্রাসী পাহাড়ে বাঙালি ও শান্তিপ্রিয় উপজাতিদের প্রতি চাঁদাবাজি, জুলুম, অত্যাচার করছে। এই তিন গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৮শ’। তারা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে থাকে। এর মধ্যে জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের রয়েছে প্রায় ৯শ’ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী। তাদের অধীনে রয়েছে সামরিক কায়দায় ৬টি কোম্পানি। জেএসএস (সংস্কার) এর রয়েছে ২টি কোম্পানি। তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীর সংখ্যা প্রায় পৌনে ৩শ’। আর ইউপিডিএফ এর ৪টি কোম্পানির অধীনে রয়েছে প্রায় ৭শ’ সশস্ত্র সদস্য। এদের অধিকাংশ চাকমা উপজাতি। সম্ভবত এদের কারণেই জনপ্রিয় উইকিতে "চাকমাদের পেশা হিসেবে চাঁদাবাজিকে প্রধান বলা হয়েছে"।
যাদের সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :-
যাদের সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :-
রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে পরিচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা। দীর্ঘ বাইশ বছর আগে শান্তির পায়রা উড়িয়ে যে বার্তা ঘোষিত হয়েছিল তা আবার ম্লান করে দিতে চাইছে আঞ্চলিক তিন গ্রুপের ১৮শ’ সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এদের টার্গেট পাহাড়ে "জুম্মল্যান্ড" ও স্বায়ত্তশাসিত সরকার গঠন। গ্রুপগুলো হচ্ছে- জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু), জনসংহতি সমিতির (সংস্কারপন্থি) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করছে। আর অস্ত্র কেনা ও নিজেদের সংগঠন চালানোর জন্য তারা চাঁদা আদায় করছে সাধারণ মানুষ, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে । ফলে জিম্মি হয়ে পড়েছে তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ মানুষ। প্রাণ ভয়ে তারা কেউই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেতে সাহস পায়না। সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন এমন একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শান্তি চুক্তির মাধ্যমে হত্যা, লুণ্ঠন, জ্বালাও, পোড়াও, নারী নির্যাতনসহ অসংখ্য সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অবসান হবে বলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জনসাধারণ আশা করেছিল। সে আশা এখন নিরাশায় পরিণত এসব উপজাতি সন্ত্রাসির কারণে, যাদের মধ্যে ৯০% আবার চাকমা। শুধু বাঙালি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নয়, উপজাতি পাহাড়িরাও অত্যাচারিত, নিপীড়িত এবং ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। জেএসএস, ইউপিডিএফ এবং সংস্কারবাদী নামে গড়ে ওঠা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিতভাবে জোর-জবরদস্তি করে চাঁদা আদায় করে, আদায়কৃত চাঁদার টাকা দিয়ে অস্ত্র কেনে এবং সেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আরো বেশি চাঁদা আদায় করে। চাঁদা দিতে হচ্ছে স্থানীয় বাজারে কৃষিপণ্য বেচতে গেলেও।
এরা ক্যাপ্টেন বা মেজর পদবি ব্যবহার করে এর সদস্যরা কোম্পানিগুলোর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। গোয়েন্দারা জানান, দুই উপায়ে সশস্ত্র সদস্যরা তাদের দল ভারি করার চেষ্টা করেন। প্রথম তারা পার্বত্য অঞ্চলে খোঁজ করেন কোন্ কোন্ উপজাতির নামে মামলা রয়েছে অথবা অপরাধের দায়ে কাদের পুলিশ খুঁজছে। তাদের তালিকা তৈরি করে নানা প্রলোভন দেখিয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়। আবার কিছু উপজাতিকে স্বাধীন পার্বত্য অঞ্চল অথবা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা জুগিয়ে প্রশিক্ষণসহ হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। এ সব সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা আবার দল থেকে প্রতি মাসে নিয়মিত বেতনও পান। সম্প্রতি "উদ্ভাস চাকমা" ও "রাজু চাকমা" নামে দুজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে তারা পুলিশের কাছে নিজেদের সংগঠন ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়।
উদ্ভাস চাকমা ও রাজু চাকমা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাদের রয়েছে নিজস্ব সেনাপ্রধান, আলাদা আলাদা কোম্পানি, বিভিন্ন উইং, শরীরে থাকে বাহিনীর পোশাক, হাতে অত্যাধুনিক ওয়াকিটকি, কাঁধে চকচকে ভারি ও দামি অস্ত্র। তারা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণ পাওয়া দক্ষ ও ক্ষিপ্র। ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলগুলোতে তাদের বিচরণ। শুধু পোশাক আর অস্ত্র নয় তাদের রয়েছে নিজস্ব পরিচয়পত্র, মুদ্রা ও পতাকা। পাহাড়ে জুম্মল্যান্ড ও স্বায়ত্তশাসিত সরকার গঠনকে টার্গেট করে নীরবে সশস্ত্র কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে এই সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এ সব সংগঠনগুলো ফেসবুক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের পতাকা, মুদ্রা ও পরিচয়পত্রের প্রচারণা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কিছুদিন আগে খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয় তার নিজ দফতরে। তিনি কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, কিছু প্রশ্নের জবাব কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। তবে তিনি বলেন, "এসব সশস্ত্র গ্রুপ তিন পার্বত্য জেলাকে নিয়ে জুম্মল্যান্ড গঠন করতে চায়", তবে তারা সংখ্যায় খুবই কম। যারা এ সব করছে তারা দেশবিরোধী কাজ করছে। এ সব সরকার ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়। তবে সন্ত্রাসীদের আলাদা পরিচয় নেই। তাদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, সেই ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি হয়েছে। শান্তি চুক্তি কি আবারো হবে? হবে না। বরং শান্তি চুক্তি যেটা হয়েছে সেটাই হচ্ছে আমাদের অধিকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিয়ে নিরন্তর কাজ করছেন। কংজুরী চৌধুরী আরো বলেন, আমরা এ বিষয়ে সরকারের যে কোনো পদক্ষেপকে স্বাগত জানাব। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার দেশের সব মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করছে। পাহাড়েও সেই উন্নয়নের বাতাস বইছে। এখানে তৈরি হচ্ছে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেডিক্যাল কলেজ। নানা উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসতে বাধ্য। এখানে কিছু লোক সরকারবিরোধী কাজে যুক্ত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার পদক্ষেপও নিচ্ছে। আমরা সরকারের অংশ, শান্তি চাই।
খাগড়াছড়ির পুলিশ বলেন, যারা আলাদা পতাকা, মুদ্রা ও পরিচয়পত্র নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অস্ত্রের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে এ অঞ্চল দিয়ে অনেক বেশি অস্ত্র আসতো। এখন সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানের ফলে অনেক কমেছে। এটা এক ধরনের সফলতা বলে মনে করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকেও অস্ত্রের কানেকশন নিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, উপজাতিদের বিভিন্ন গ্রুপের সশস্ত্র সদস্যরা প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। তারা গভীর অরণ্য থেকেই তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে গোপন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হেড কোয়ার্টারের যে নির্দেশ আসবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, এক অর্থে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। এলাকায় হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক এসেছে। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি। এমনকি মাসব্যাপী বিজয় দিবসের মেলায় পাহাড়ি বাঙালির ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো।
মূলত উপজাতি এ সংগঠনগুলোর উগ্র সন্ত্রাসিদের কারণে শান্তিচুক্তি পুৃরো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা। তারা অনেক বাঙালিকে তাদের সরকার বরাদ্দ খাস জমিতে যেতে দেয়না। তারা প্রচার করে, ওসব জমি তাদের। দরিদ্র সেটেলার বাঙালিদের তারা খুব ঘৃণার চোখে দেখে। তারা পাহাড়ে যে কোন উন্নয়নের বিরুদ্ধে, সেনাদের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ সংবিধানের বিরুদ্ধে, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। যারা সাজেক গিয়েছেন তারা দেখেছেন, পথে পথে এদের পোস্টার সরকার, সেনা ও উন্নয়নের বিরুদ্ধে।
এদের সাপোর্ট করছে যেসব উপজাতি তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার। মনে রাখা দরকার, এরা বাংলাদেশে থেকে, বাংলাদেশেরটা খেয়ে, বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ড করছে। দেশপ্রেমিক লোকজন এদের বিরুদ্ধে সজাগ না হলে, এদের অপপ্রচার ও বাংলাদেশ এবং বাঙালি বিরোধী কর্মকান্ড চলতেই থাকবে। লেখাটি লিখতে ইত্তেফাকে প্রকাশিত একটা রিপোর্টের সাহায্য নেয়া হয়েছে। সাথে এ বিষয়ে দেখতে পারেন DBC টিভি রিপর্ট, যার লিংক নিচে) :
https://www.facebook.com/rohan.pal.524596/videos/344178976013060/
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]