বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি‘র স্মৃতিফলক |
বার্মা ও ভারত থেকে বহিরাগত উপজাতিদের পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার স্রোত বন্ধ করা, পাহাড়ী বনদস্যুদের হাত থেকে নিরীহ বাঙালীদের রক্ষা করা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য রামগড়ে এই বাহিনীর আত্নপ্রকাশ ঘটে। তৎকালীন সময় থেকেই বহিরাগত উপজাতীয়দের উপদ্রব মারাত্নক আকার ধারণ করেছিল বিধায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে এই বাহিনী গঠন করতে বাধ্য হয়েছিল। বিজিবির কর্মপরিধি বাড়লেও উপজাতীয় জনস্রোত পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারেনি, ঠিক যেমনটা পারছেনা রোহিঙ্গা জনস্রোত রোধ করতে। বর্তমানে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বভৌম রক্ষার দায়ীত্বে থাকা সেনাবাহিনীকে আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উপজাতীয়দের চাপে প্রত্যাহার করতে হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান স্বীকৃতের দাবীদার বিজিবিকে হতে হচ্ছে একের পর এক হামলার স্বীকার। পুলিশ নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা। র্যাব নিয়ে চলছে অপপ্রচার, আন্দোলন। বসবাসরত স্থানীয় বাঙালী নিধনে নেয়া হচ্ছে মহা পরিকল্পনা।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৯৪ সালে ফ্রন্টিয়ার প্রটেকশন ফোর্স গঠন করে। ১৭৯৫ সালের ২৯ জুন এর নাম পরিবর্তন
করে (বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায়) রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন করা হয়। কালের বিবর্তনে এই বাহিনী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ধারন করেছে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রন্টিয়ার গার্ডস, ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ, ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেল্স, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্স, ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ রাইফেল্স, সর্বশেষ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি নামকরণ করা হয়।
রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন (১৭৯৫-১৮৬০):
১৭৯৫ সালের ২৯শে জুন রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন নামে সৃষ্টি হয় এ বাহিনী। যার সৈন্য সংখ্যা ছিলো মাত্র ৪৪৮জন। সীমান্ত সমস্যা বৃদ্ধি পেলে এ বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের দীর্ঘকালীন অভিযানে অংশগ্রহণ করে। ৬পাউন্ড গোলার ৪টি কামান ও দু’টি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে গঠিত হয় সেদিনের রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন।
ফ্রন্টিয়ার গার্ডস (১৮৬১-১৮৯০) :
১৮৬১ সালে পূর্বাঞ্চলের নিয়মিত ও অনিয়মিত পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন পুনর্গঠিত হয়। যার নামকরণ করা হয় ফ্রন্টিয়ার গার্ডস। সদস্য সংখ্যা ছিলো ১৪৫৮জন এবং সদর দপ্তর ছিলো চট্টগ্রামে। যার মধ্যে কামরূপ, গোয়ালপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিলেট ও ত্রিপুরার সীমান্ত ফাঁড়িগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিলো। ১৮৭৯ সালে স্পেশাল রিজার্ভ কোম্পানির নামে এ বাহিনীর তৎকালীন সদস্যগণকে নিয়ে পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন করা হয়। সে থেকে অদ্যাবধি পিলখানায় রাইফেলস সদস্যদের কর্মকান্ড অব্যাহত আছে।
বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশ (১৮৯১-১৯১৯) :
১৮৯১ সালে বাহিনীর নতুন নামরকণ করা হয় বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশ। ব্যাটালিয়নকে ৪টি কোম্পানীতে ভাগ করা হয়। ঢাকা, খুলনা, ভাগলপুর ও গ্যাংটকে কোম্পানীগুলো স্থানান্তর করে একজন ইউরোপীয় সুবেদারের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।
ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ (১৯২০-১৯৪৬) :
১৯২০ সালে কালের বিবর্তনে বেঙ্গল মিলিটারী পুলিশের পুনঃ নামরকণ করা হয় ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ এবং একে ১৬টি প্লাটুনে বিভক্ত করে সীমান্ত রক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্ত রক্ষায় নিয়োজিত করা হয়।
ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ (১৯৪৭-১৯৭১) :
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর এ বাহিনীর নামরকণ করা হয় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ বা সংক্ষেপে ইপিআর। কোলকাতা মেট্রোপলিটন আর্মড পুলিশের একটি দল কতিপয় বাঙ্গালী এবং তদানিন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের এক হাজার প্রাক্তন সৈনিক এ বাহিনীতে যোগ দেয়। পরবর্তীতে আরও তিন হাজার বাঙ্গালীকে নিয়োগ করে এ বাহিনীকে পুনর্গঠিত করা হয়। দক্ষ নেতৃত্ব এবং দিক নির্দেশনার প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী থেকে অফিসার নিয়োগ করা হয়। ১৯৫৮ সালে এ বাহিনীকে প্রদান করা হয় চোরাচালান দমনের দায়িত্ব। দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ১৯৫৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১নম্বর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মেজর তোফায়েল আহম্মেদ জীবন উৎসর্গ করে তৎকালীন রাষ্ট্রীয় খেতাব নিশান-ই-হায়দার অর্জন করেছিলেন। প্লাটুন কমান্ডার শহীদ নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ আজম অর্জন করেছিলেন সিতারা-ই জরাত। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য এ বাহিনীর ১৪২জন সদস্য জাতীয় বীরত্বপূর্ণ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। যার মধ্যে মরণোত্তর বীর শ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ এবং শহীদ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ। বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৯জন, বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৪০জন এবং বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ৯১জন।
বাংলাদেশ রাইফেলস্ বা বিডিআর (১৯৭২ সাল থেকে) :
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ৩রা মার্চ ইপিআর এর নতুন নামকরণ করা হয় বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস্)। রামগড়ে বাংলাদেশ রাইফেলস্ এর জন্ম উপলক্ষে একটি মনোরম স্মৃতিফলক রয়েছে। যাতে বিডিআর এর ধারাবাহিক ইতিহাস দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে বিধৃত করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি ( ২০০৯ সাল থেকে):
সর্বশেষ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি নামকরণ করা হয়।
কিভাবে যাওয়া যায়:
বিজিবি এর জন্ম সম্পর্কিত ঐতিহাসিক স্থানটি রামগড় উপজেলা পরিষদের পাশে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]