বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

পূর্ববঙ্গের হিন্দুরা কেন দেশ ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছিল?-পর্ব ২

পুর্ব অঞ্চলে কিন্তু স্বাধীনতার পর, যখন দেশ বিভাগ হয়ে গেল, অবস্থা ভিন্ন রূপ নিল। এখানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধল না। বরং পুর্ব হতে যেখানে দাঙ্গার জের চলছিল তা স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেল। অন্তত প্ৰথম দিকে আপাতদৃষ্টিতে শান্তি অক্ষুন্নই ছিল। তাই যদি হয় তবে এত মানুষ পুর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করে চলে আসে। কেন? এই প্রশ্ন সেদিন আমার মনে উদয় হয়েছিল। নিজের দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছায় এত কষ্ট বরণ করবার কোন সঙ্গত কারণ আছে কি? (১) এটি আগের পর্বের ধারাবাহিকতা। একজন আমাকে আর একপাশে টেনে নিয়ে গিয়ে বললেন ; -ওঁর কাছে তো একদফা শুনলেন। এখন আমার কাছে আর এক দফা শুনুন। দেখলাম, তারও মুখে উত্তেজনার ভাব ফুটে উঠেছে। আমার সম্মতির জন্য অপেক্ষা না করেই তিনি বলে চললেনঃ -পাকিস্তানে হিন্দুর মেয়ের পুকুরঘাটে স্নান করতে যাওয়া আর সম্ভব নয়। খবর রাখেন ?


আমি আর কি খবর রাখব? তাঁদের কাছ থেকেই তো জানতে এসেছি। তিনি যা বিবরণ দিলেন তা বেদনাদায়ক। যা বললেন, তা সংক্ষেপে দাঁড়ায় এই রকমঃ হিন্দুর মেয়েরা ঘাটে স্নান করতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের লোক পাড়ে এসে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে বয়সে নবীন যুবক যেমন আছে, তেমন বয়সে প্ৰবীণ প্রৌঢ়ও আছে। দাঁড়িয়ে নাকি তারা ছড়া কেটে গান ধরে। এক পাড়ের লোক গায়: -পাক পাক পাকিস্তান, আর অন্য পাড়ের লোক বলে, - হিঁদুর ভাতার মুসলমান।

এই অদ্ভুত আচরণে যে মেয়েটা স্নান করতে জলে নেমেছে সে স্বভাবতই আড়ষ্ট হয়ে পড়ে। নিৰ্যাতনকারীদের মতে তার সেই আচরণ ভারি কৌতুকবোধ জাগায়। তারা হেসে কুটিকুটি হয়। এখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে না। তারপর নাকি ঘাটের দিকে একজন প্রৌঢ় পুরুষ এগিয়ে এসে বলেঃ -ও বিবি, বেলা যে বেড়ে চলল। আর দেরী কেন ? এবার ঘরে চল।

সে কথা শুনে মেয়েটি ভয়ে আরও আড়ষ্ট হয়ে পড়ে। আবার ওদিকে হাসির হুল্লোড় বয়ে যায়। তখন সেই প্রৌঢ় মানুষটি এক নবীন সঙ্গীকে উদ্দেশ করে বলেঃ -ওরে, তোর চাচীর পায়ে বুঝি খিল ধরেছে। উঠতে কষ্ট হচ্ছে। হাত ধরে তুলে নিয়ে আয় না।

ভদ্রলোক এইখানেই কাহিনী শেষ করলেন। তারপর বললেন, এরপর আর দেশে থাকি কি করে। পালিয়ে আসি। তবে একথা ঠিক, খুনোখুনি এখনও শুরু হয়নি। (২)
নোটঃ
(১) পর্ব ১ঃ পূর্ববঙ্গের হিন্দুরা কেন দেশ ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছিল? 
(২) শ্রী হিরণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, উদ্ধাস্তু, সাহিত্য সংসদ, ১৯৬০, পৃ. ১৫-১৬

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]