কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও এর আশপাশে হঠাৎ করেই রোহিঙ্গাদের ২১ দফা দাবি সম্বলিত ব্যানারে ছেয়ে গেছে। ক্যাম্পের ভেতরে বাইরে প্রধান সড়কের পাশে এবং দর্শনীয় স্থানে লাগানো হয়েছে এ ব্যানার। ‘আমাদের ২১ দফা মানতে হবে’ রোহিঙ্গা অধিকার প্রতিষ্ঠা কমিটি, প্রতিষ্ঠা ২৫ আগস্ট ২০১৭, আবেদনে সকল রোহিঙ্গা জনগণ শিরোনামে ২টি ছবি ও লোগো সম্বলিত প্রচারিত ব্যানারে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় ২১ দফা উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল সকালে সবার নজরে পড়ে ২১ দফার এ ব্যানার। ৯ অক্টোবর সোমবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে কে বা কারা এ ব্যানার তৈরি করেছে বা লাগিয়েছে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। সাধারণত ডিজিটাল ব্যানারে প্রেসের ঠিকানা থাকে। কিন্ত এ ব্যানারে ঠিকানাও নেই। তাছাড়া দিনভর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনুসন্ধান করেও কথিত রোহিঙ্গা অধিকার প্রতিষ্ঠা কমিটির খোঁজ মিলেনি। ২১টি দফা দাবি সম্বলিত বড় বড় ডিজিটাল এ ব্যানার সবার নজর কাড়লেও ব্যানারগুলো কে বা কারা তৈরি করেছেন সেটা কেউ স্বীকার করেনি। রোহিঙ্গারা এখনও আসছে। যারা এসেছেন তারা এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। সবার ন্যুনতম মাথা গোঁজার ঠায় হয়নি। সরকারিভাবে শরণার্থীর মর্যাদা দেয়া হয়নি। এমতাবস্থায় ২১ দফা দাবি বাস্তবায়নের ব্যানার প্রচার স্থানীয় সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
২১টি দফার দাবি সম্বলিত বড় বড় ডিজিটাল এ ব্যানার ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষায় লেখা। প্রথম লাইন লাল কালিতে ইংরেজি এবং ২য় লাইন কাল কালিতে বাংলায়।
২১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে-
১. সকল রোহিঙ্গা জনগণকে বাধ্যতামূলক নাগরিক অধিকার দিতে হবে ও বার্মা সরকারের পক্ষ থেকে কোন শর্ত না দিয়ে আমাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
২. রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আগে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর যেগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে করতে হবে।
৪. রোহিঙ্গাদের সকল শিক্ষার অধিকার দিতে হবে।
৫. রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরের জমিজমা কোন শর্ত ছাড়াই কাগজে-কলমে ফেরৎ দিতে হবে।
৬. রোহিঙ্গাদের পুরানো নাম আরাকান স্টেট দিতে হবে।
৭. রোহিঙ্গাদের স্বাধীনভাবে ব্যবসা বাণিজ্যের অধিকার দিতে হবে এবং ব্যবসা বাণিজ্যের মালামালের নিরাপত্তা দিতে হবে।
৮. আরাকানে রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা বিচার ব্যবস্থা করতে হবে। জজ, ম্যাজিস্ট্রেট রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে দিতে হবে।
৯. রোহিঙ্গাদের ধরে ধরে জেল হাজতে বন্দি রেখে দিনের পর দিন নির্যাতিতদের শর্তবিহীন ছেড়ে দিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা জেলখানা আরাকানের ভেতরে স্থাপন করতে হবে।
১০. রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা সরকারি মুসলিম মন্ত্রণালয় স্থাপন করতে হবে।
১১. যেকোন এনজিও দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের আরাকানে প্রবেশ করার অধিকার দেওয়ার পাশাপাশি নিজস্ব টিভি চ্যানেল পরিচালনায় কোন বাধা দিতে পারবে না।
১২. আরাকানের জমিতে অবস্থানরত বৌদ্ধ ধর্মের লোকদের বাড়িতে যে অস্ত্র ও বোমা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ সরকারিভাবে ফেরৎ নিতে হবে।
১৩. রোহিঙ্গা নারী শিশু যুবকদের উপর যুগ যুগ ধরে গোপনে প্রকাশ্যে যে গণহত্যা নারী ধর্ষণ করা হয়েছে তার বিচার আর্ন্তজাতিক আদালতে হতে হবে।
১৪. রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতি থানায় থানায় ওআইসি এবং জাতিসংঘের শান্তি মিশনের ফোর্স নির্ধারিত থাকতে হবে।
১৫. রোহিঙ্গাদের মসজিদ মাদরাসা মক্তব তবলীগের মরকজসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্টান স্থাপন করতে দিতে হবে।
১৬. রোহিঙ্গাদের সকল প্রকার সরকারি ডিপার্টমেন্টে চাকরি দিতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের অধিকার দিতে হবে।
১৭. পুরো আরাকানে ও বার্মার যেকোন স্থানে রোহিঙ্গাদের চলাফেরা করার অধিকার দিতে হবে।
১৮. রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ভিসা পাসপোর্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাসপোর্ট অফিস আরাকানের ভেতরে হতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের বিদেশ গমনাগমণের সুযোগ দিতে হবে।
১৯. কোন মামলা ছাড়া মিলেটারি পুলিশসহ যেকোন বাহিনী অনর্থক রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে চেক করার নামে ঢুকতে পারবে না।
২০. রোহিঙ্গা আলেম ওলামাদের পাঞ্জাবী পায়জামা টুপি পরনে বাধা না দেয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় কাজে বাধা দিতে পারবে না।
২১. গবাদিপশু হাঁস-মুরগি পালনে কোন ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে না।
ব্যানারে আরও লেখা হয়েছে ‘আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই, আমাদের অধিকার আমরা চাই, মারামারি নয়, হানাহানি নয়, খুনাখুনি নয়, অধিকার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই’।
এ ব্যাপারে লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (স্থানীয় ভাষায় রোহিঙ্গা টাল) নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাফেজ মোঃ আয়ুব আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘আজ (৯ অক্টোবর সোমবার) ঘুম থেকে উঠে সকালে দেখি আমার বাসার বাইরে এ ব্যানার। তা কে বা কারা লাগিয়েছে সে সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না’।
ক্যাম্পের প্রবীণ মুরুব্বী মাস্টার আবদুল জব্বার এবং মাস্টার আবদুল মতলবও একই মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, এ ব্যানার রোহিঙ্গা বা রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোন গোষ্ঠি পরিকল্পিতভাবে লাগিয়েছেন কিনা দেখতে হবে। যদিও ব্যানারে লেখা ২১টি দফার ২১টি দাবিই যথার্থ, সঠিক ও যুক্তিসঙ্গত। তবে রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলাদেশ কোনো হুমকির মুখে পড়ে কিনা সেটিও বিবেচনা করতে বলেছেন তারা।
ব্যানারের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়ায় টেকনাফ-উখিয়ার সাবেক এমপি ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘এসব ভাল লক্ষণ নয়। রোহিঙ্গাদের পেছনে আর্ন্তজাতিক চক্রান্ত রয়েছে। মহলটি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে অশুভ রাষ্ট্র বানাতে তৎপর। সুতরাং এসব বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
ইকবাল আজিজ
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]