মুসলমানগণ এইভাবে বঙ্গদেশে বাঙ্গলা ভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করিয়া আমাদের সাহিত্যে এক নূতন যুগ আনয়ন করিলেন। শুধু তাহাই নয়, তাহাদের প্রভাব আমাদের ভাষার বক্ষে আরবী-ফারসী ভৃগু পদচিহ্ন অঙ্কিত করিয়া দিল। প্রাকৃত ভাষার উপর ঐ সকল বিদেশী ভাষার দুচ্ছেদ্য ছাপ পড়িয়া গেল। মুসলমানেরা রাজ তখতে বসিলেন। তাহারাই সর্ববিষয়ে দেশে প্রাধান্য লাভ করিলেন। বিলাসের আসবাব রাজদরবারে যাহা কিছু শাসন সংক্রান্ত সমস্ত উচ্চপদ তাহাদের অধিকৃত হইল। বাঙ্গলা ভাষার অভিধান বদলাইয়া গেল। ‘রাজস্ব’ শব্দ ‘খাজনায়’ পরিণতি হইল, ‘প্রজা’রা ‘রায়ৎ’ হইয়া গেল। ‘মহাপাত্র’ ‘উজীর’ হইলেন, ‘নিশিপত’ ‘কোটাল’ হইল, ‘ধর্মাধিকারী’ ‘কাজী’ হইলেন, ‘ভৃত্য’ ‘নফর’ হইল, ‘দোষী ব্যক্তি’ ‘আসামী’ হইল, ‘অভিযোগ কারী’ ‘ফরিয়াদী’ হইলেন৷ ‘বিচারালয়’ বা ‘রাজসভা’ ‘আদালত’ ও ‘দরবারে’ পরিণত হইল। ‘প্রভু ’ হইলেন ‘হুজুর’ , ‘দাস’ হইল ‘খেদমতগার’।এইরূপ অসংখ্য শব্দ আলোচনা করিলে দেখা যাইবে যে, জাতীয় জীবনের উচ্চস্তরের ভাষা অনেকটা পরিবর্তিত হইয়া গেল৷
যেখানে বিলাস, যেখানে আমোদ-প্রমোদ, সেখানেও বিজেতাদের ভাষা প্রভাব বিস্তার করিল।যাহা সামাজিক জীবনের অধ:স্তরের কথা, সেই শব্দগুলি শুধু প্রাকৃত ভাবাপন্ন রহিয়া গেল। কুটির বা কুঁড়ে কথার পরিবর্তন হইল না, মেটে তেলের দীপটি কুঁড়েঘরে ‘প্রদীপ’ বা ‘পিদিম’ হইয়া জ্বলিতে লাগিল, কিন্তু রাজপ্রাসাদে বা প্রাসাদোপম গৃহের আলো, ঝাড়, ফানুস, দেয়ালগিরি প্রভৃতি নাম বিদেশী কায়দা অবলম্বন করিল।শেষোক্ত শব্দটির শেষাংশ ফরাসীর অপভ্রংশ।
ভাত, ডাইল, তেল, ঘি, ক্ষেতের শস্য প্রভৃতি নাম বদলাইল না। কিন্তু খাদ্য যেখানে উপাদেয় ও বিলাসীর যোগ্য, তখন তাহা ‘খানা’ হইয়া গেল।ক্ষেত যখন প্রভুত্বের নিদর্শন সেখানে তাহা ‘জমি’।‘ভূস্বামী’ জমিদার হইয়া পড়িলেন।দেশের বাণিজ্য ধীরে ধীরে মুসলমানের হস্তগত হইল, তখন উহার নাম হইল ‘কারবার’ , কারবারের সঙ্গে ‘আমদানী’ ‘রপ্তানী’ও বঙ্গভাষায় ঢুকিল।
সৌখিন লোকদের সুগন্ধি-অগুরু ও চন্দনের স্থলে ‘আতর’ ‘খােশবাে’ অধিকার করিয়া লইল । আকাশের বায়ু, তারা, চাঁদ, সূর্য এইগুলি অভিধানে রহিয়া গেল কিন্তু যেখানে বড় মানুষদের গৃহ কৃত্রিম আলোমালায় সুশোভিত হইল, সেখানে তাহা ‘রৌশনাই’ নাম ধারণ করিল। পূর্বে মাগধী ‘সূত’ ও ‘বন্দীরা’ শ্রুতিমধুর বন্দনাগীতি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গীতের সঙ্গে মিল রাখিয়া প্রত্যুষে গান করিত।সেই সঙ্গীতের মােহনীয় গুণে রাজাদের নিদ্রাভঙ্গ হইত, কিন্তু এখন তাহার স্থলে ‘রৌশনিচৌকী’ ‘নহবত’ ইত্যাদি শব্দ প্রবর্তিত হইল ।‘রাজসিংহাসন’ ‘তখতনামায়’ পরিণত হইল।
তাহা ছাড়া বিচারালয়ের সমস্ত শব্দ, ‘মতরজ্জম’, ‘নাজির’, ‘দলিল’, ‘দস্তরখানা’, মােক্তার’, ‘আইন’, ‘মুসাবিদা’, ‘পেয়াদা’ ‘খাজাঞ্চিখানা’ ‘উকীল’ ‘আরজী’ প্রভৃতি শত শত শব্দ প্রাচীন ভাষার প্রাকৃত শব্দের স্থল কাড়িয়া লইয়া নিজেদের অধিকার বিস্তার করিল।
মুসলমানেরা এদেশ বিজয় করিয়া প্রভুত্ব করিয়াছিলেন এবং জীবনের ‘ক্ষীরসর নবনীত’ সমস্ত ভোগ করিতেছিলেন-তাহা কোন ইতিহাসে লেখা না থাকিলেও শুধু বাংলা ভাষা আলোচনা করিলেই স্পষ্টভাবে বুঝা যাইতে পারে। আমরা দেখিতে পাইলাম, বঙ্গভাষা মুসলমান সম্রাটদের কৃপায় দ্বিতীয়বার জন্মগ্রহণ করিয়া ‘দ্বিজের’ ন্যায় সম্মান লাভ করিল ৷ বঙ্গভাষার উপর আরবী ও ফারসী তাহাদের সুস্পষ্ট ছাপ অঙ্কন করিয়া দিল ৷
এইবার আমরা দেখাইব তাহারা শুধু বঙ্গভাষার উপর পুর্বোক্ত প্রভাব বিস্তার করিয়াই নিরস্ত হন নাই, তাহারা বঙ্গভাষাকে অপূর্ব কবিত্ব সম্পদে ভূষিত করিয়াছেন।তাহারা মুসলমানী কিতাব লিখিয়া বাঙ্গলাকে উর্দুর দিকে টানিয়া আনিয়াছেন সত্য, কিন্তু বিকৃত মুসলমানী বাঙ্গলায় আমরা বঙ্গভষায় তাহাদের রচনার উত্কর্ষের বিশিষ্ট নিদর্শন পাই নাই।
অনুমান ১৫৭৮ খৃষ্টাব্দে ফতেয়াবাদ পরগণায় সৈয়দ আলওয়ালের জন্ম হয়।ইনি বাঙ্গলা ভাষায় এতটা সংস্কৃত শব্দ আমদানী করিয়াছেন যে, স্বয়ং ভারতচন্দ্রও ততটা করিয়াছেন কিনা সন্দেহ।ইনি সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণ, অলঙ্কার ও সাহিত্যে বিশেষ বূৎপন্ন ছিলেন এবং স্বীয় পদ্মাবৎ গ্রন্থে অনেক সংস্কৃত শ্লোক নিজে রচনা করিয়া জুড়িয়া দিয়াছেন।আলওয়ালই তাঁহার আদি বার্তাবহ।তাহার কাব্য এখনও চাটগাঁয়ের মুসলমানেরা দল বাঁধিয়া গান করিয়া বেড়ায় এবং ইহা বড়ই আশ্চর্যের বিষয় যে, মুসলমান শ্রোতাগণ এরূপ সংস্কৃতাত্মক একখানি কাব্যের রস আস্বাদ করিয়া থাকে।চাটগাঁয়ের মুসলমানদের রীতি অনুসারে এই বাঙ্গলা পদ্মাবৎ গ্রন্থ ফারসী অক্ষরে লিখিত হইয়া থাকে। পুস্তকের রচনা হইতে একটা নিদর্শন দিতেছি:
“বসন্তের নাগরব নাগরীবিলাসে৷
বরবালা দুই ইন্দু সবে যেন সুধা বিন্দু
মৃদুমন্দ অধরে ললিত মধু হাসে।
প্রফুল্লিত কুসুম, মধুব্রত ঝংকৃত
হুংকৃত, পরভূত কূঞ্জে রতরাসে ৷
মলয় সমীর সুসৌরভ সুশীতল,
বিলুলিত স্পতি অতিশয় রসভাসে
প্রফুল্লিত বনস্পতি, কুটিল তমাল ভ্রম,
মুকুলিত চ্যুতলতা কােরক জালে।
যুবজন হৃদয়, আনন্দে পরিপুরিত
বঙ্গ মল্লিকা মালতী মালো।
মধু সেনপতি সঙ্গে মদন মেদিনী পতি বাহিনী
কােরক নব পল্লব পূর্ণিত।
নবদন্ড কেশর, চামর সৌরভ,
ভুবন বিজয়ী চিত্ত যুবক শাসিত ৷
চৌদিকে যুবতিকুল, মাঝে শুনায় রব
নৃত্যগীত অতিশয় আনন্দে বিভােরে।
রোমাঞ্চিত শরীর, শ্রমিতা প্রেমভাসে অতিরসে।
রমণী ললিত পতি উরে।।”
এই কবিতাটি পড়িতে পড়িতে-
“মদন মইিপতে কনক দণ্ড
রুচি কেশর কুসুম বিকাশে,
মিলিত শিলী মুখ পাটলি পটলকৃত
স্মর তুণ বিকাশে।।
উন্মাদ মদন মনোরথ পথিক,
বধূজন জনিত বিলাপে।
অলিকুল সঙ্কুল, কুসুম সমূহ
নিরাকুল বকুল কলাপে।।”
প্রভৃতি জয়দেবের কবিতাগুলি স্বতঃই মনে পড়িবে৷ কিন্তু আলওয়ালের ছন্দসম্পদ ছিল অপূর্ব। নিরক্ষর চাষাদের আবৃত্তিতে ও ফারসী অক্ষরের নােক্তার গোলযােগে সেই ছন্দগুলির অনেক বিভ্রাট হইয়াছে। এতবড় পণ্ডিতের রচনায় যদি ভুল পাওয়া যায়, তবে অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে, তাহা কখনই তাহার কৃত নহে, তাহা নিশ্চয়ই নকলের বিভ্রাটে ৷ যিনি মগন, রগন প্রভৃতি অলঙ্কার শাস্ত্রের মূল সূত্র লইয়া এতটা সূক্ষ বিচার করিয়াছেন এবং স্বয়ং বহু সংস্কৃত শ্লোক রচনা করিয়াছেন, তাঁহার মূল রচনায় সে সকল দোষ কখনই ছিল না। বিশেষ বিশেষ ছন্দের জ্ঞান না থাকিলে আলওয়ালের সকল কবিতা আবৃত্তি করা সহজ হইবে না।
আলওয়াল জীবনে বহু কষ্ট সহ্য করিয়াছিলেন, যৌবনে এক জাহাজে চড়িয়া তাহার পিতা মজলিস কাজির সংগে বঙ্গোপসাগরে যাইতেছিলেন । পর্তুগীজ জলদস্যুরা তাহাদের জাহাজ আক্রমণ করে । সেই সমুদ্র বক্ষে জাহাজের উপর ছোটখাট একটি জলযুদ্ধ হয়। আলওয়ালের পিতা যুদ্ধে নিহত হন । কোন রকমে অব্যাহতি লাভ করিয়া আলওয়াল আরাকান যাইয়া তথাকার সচিব মাগন ঠাকুরের আশ্রয় লাভ করেন । মহামান্য মাগন ঠাকুর তাঁহার পাণ্ডিত্য ও কবিত্ব দেখিয়া মুগ্ধ হন এবং তাহারই আদেশে আলওয়াল ‘পদ্মাবৎ’কাব্যের অনুবাদ করিতে প্রবৃত্ত হন।
এই সময় সুজা বাদশাহ আরাকানে উপস্থিত হন এবং তাহার সহিত আরাকানরাজের মনােমালিন্য ঘটে ৷ সুজা বাদশাহের গুপ্তচর বলিয়া আলওয়াল একটি মিথ্যাবাদী লোকের সাক্ষ্যে অভিযুক্ত হন এবং কারাগারে নিক্ষিপ্ত হইয়া সাত বৎসরকাল কারাযন্ত্রণা ভোগ করেন। তৎপরে উদ্ধার পাইয়া তিনি “ছয়ফুল মুল্লুক ও বদিউজ্জামান” নামক একখানি বাঙ্গলা কাব্য রচনা করেন।
আলওয়ালের আরও অনেক কাব্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখনও সাদরে পঠিত ও গীত হইয়া থাকে ৷ তিনশত বৎসর পরেও যে কবির কাব্য জনসাধারণ হৃদয়ে গাঁথিয়া রাখিয়াছেন, তাহার কবিতার গুণাগুণ আর সমালোচনাসাপেক্ষ নহে ৷ তিনশত বৎসর যাবৎ যে কাব্য লোকের হৃদয়ে আনন্দ দান করিয়াছে, তাহার সমালোচনার আর বাকী কী আছে?
বাঙ্গলার একটি প্রদেশের একখানি ক্ষুদ্র ইতিহাস আছে ৷ ইহা এত ছোট যে, ইহাকে একখানি ইতিহাসিকা বলা চলে, ইহার প্রায় ৪০০ ছত্র কবিতা আছে । শমসের গাজী.… কালক্রমে এমন প্রবল হইয়া উঠেন যে, তিনি ত্রিপুরেশ্বরকে সিংহাসনচ্যুত করিয়া তৎস্থলে নিজে অধিষ্ঠিত হন । শমসের আলীবর্দি খাঁর সমসাময়িক লোক ও প্রায় দৃইশত বৎসর পূর্বে জীবিত ছিলেন । এখনও শমসের গাজির গান ত্রিপুরার গীত হইয়া থাকে । অবশ্য ত্রিপুরার ‘রাজমালা’ গ্রন্থে তার বিবরণ সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ আছে । শমসের গাজির বিবরণ সমস্তই ঐতিহাসিক।
ইনি রাজপদ প্রাপ্ত হইয়া দেশে শিক্ষা প্রচলনের যে রীতি প্রবর্তিত করিয়াছিলেন, ধান-চাউল ও অপরাপর খাদ্যদ্রব্যের এবংসোনা-রূপার যে দর বাঁধিয়া দিয়াছিলেন, রাস্তাঘাট নির্মাণ করিয়া দেশের যে উন্নতি সাধন করিয়াছিলেন, তাহার একটি নিখুঁত ও খাঁটি চিত্র আমরা এই পুস্তকখানিতে পাইয়াছি ।… নানারূপ ঐতিহাসিক তত্ত্বে এই পুস্তকখানি পূর্ণ ৷ যদিও গ্রন্থকারের নাম নাই, তথাপি তিনি যে মুসলমান ও শমসের গাজির অন্তরঙ্গ ভক্ত ছিলেন বই পড়ার পর তাহাতে কোন সন্দেহ থাকিতে পারে না ।
এই বইখানি,রাজকৃষ্ণ বাবুর কথায় বলিতে গেলে একটি মুষ্টি ভিক্ষা, কিন্তু উহা সুবর্ণ মুষ্টি, যেহেতু প্রাচীন বাঙ্গলায় ঐতিহাসিক পুস্তক অতি অল্পই আছে । প্রায় ১২ বৎসর পূর্বে নােয়াখালির জজ আদালতের সেরেস্তাদার মৌলভী লুৎফুল কবীর সাহেব এই পুস্তকখানি প্রকাশিত করিয়া আমাকে একখণ্ড উপহার পাঠাইয়াছিলেন ৷ কিন্তু কবীর সাহেব তারপর কিভাবে কোথায় গেলেন এমন কি, তিনি জীবিত কি মৃত, তাহা আমরা বহু সন্ধান করিয়াও জানিতে পারি নাই । তাঁহার বাড়ী ছিল ত্রিপুরা জেলায়৷ ছোটলাটের প্রাইভেট সেক্রেটারী গুরলে সাহেব একখণ্ড শমসের গাজির গানের বই খুঁজিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি তাহা পান নাই ৷ প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক স্বর্গীয় কৈলাশচন্দ্র সিংহ মহাশয় তাহার ‘রাজমালা’য় শমসের গাজির বিস্তৃত বিবরণ দিয়াছেন।
যদি মুসলমানগণ তাহাদের সমাজের উন্নত চরিত্রগুলি সুন্দর ও মহিমান্বিত বর্ণে চিত্রিত করিয়া বাংলা সাহিত্যে উপস্থিত করেন, তবে হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে তাহাদের দ্বারা প্রভাবান্বিত হইবে ৷ উত্তর-পশ্চিমে অনেক হিন্দু মহররমের মর্মন্তুদ কাহিনী শুনিয়া অশ্রু বিসর্জন করে এবং উৎসবের দিনে তাজিয়া বাহির করে । নিদারুণ তৃষ্ণায় জলবিন্দুর জন্য কোমল কুসুমকােরকের মত সখিনা ও কাসেম শুকাইয়া মরিলেন-কারবালা ক্ষেত্রের সেই করুণ কাহিনী কি শুধু মুসলমানেরই জাতীয় সম্পত্তি, না সমস্ত বিশ্ববাসীর রস-সম্পদ?
বঙ্গের যে পল্লীসঙ্গীত মুসলমান কৃষকের অতুলনীয় সম্পদ, যে গৌরব নভস্পর্শী অপূর্ব, আশ্চর্য, তাহার কথা আমি পরে লিখিতেছি । এখন এই সঙ্গীতের স্রোত মুসলমান সমাজে অবরুদ্ধ করিলে তাহাদের জাতীয় জীবন শুকাইয়া মরিবে ৷
বাড়ীখানি গঙ্গার তীরে অবস্থিত, সেই সুর নদীকে বদ্ধ করিলে জাতীয় জীবনের রসধারা কে সঞ্জীবিত রাখিবে? আমির খসরু সেতারের উদ্ভাবন করিয়াছিলেন, মিঞা তানসেন সঙ্গীত বিদ্যারূপ হিমাদ্রির কাঞ্চন জঙঘায় অধিরােহণ করিয়াছিলেন । ইহারা কি ইসলামের শত্রু ছিলেন?
এ পর্যন্ত আমরা অনেক মুসলমান বাঙ্গলা কবির নাম করিয়াছি, কিন্তু তাহা অতি নগণ্য অংশ ৷ পূর্ববঙ্গের নিরক্ষর মুসলমান চাষা ও মাঝিরা মুখে মুখে যে সকল গান বাঁধিয়া থাকে, তাহা অনেক সময় অতি সুন্দর কবিত্বময় । মুসলমান বাউলের ‘মুরশিদা’ গান দেহতত্ত্ব বিষয়ক, তাহার ভাব-সম্পদ আধ্যাত্মিক, অনেক স্থলে তাহা এত সুন্দর যে আমাদের আশ্চর্য বোধ হয়, সামান্য ফকির ও বাউলেরা কি করিয়া ধর্মরাজ্যের সেই সকল সূক্ষ তত্ত্ব আয়ত্ত করিয়াছে? শত শত মুরশিদা গান সেই সকল বাউল, মাঝি ও কৃষকের কণ্ঠে ধ্বনিত হইয়া বাঙ্গলার পল্লীর আকাশ-বাতাস পূর্ণ করিয়া রাখিয়াছে । এই সকল পল্লীর আধ্যাত্মিক ঐশ্বর্য গর্ব করিবার সামগ্রী, আমরা কখনও করিয়াছি?
এই বঙ্গদেশে কত মসজিদ, কত ইষ্টক ও শিলালিপি, কত কীর্তিস্তম্ভ মুসলমানের বিজয়ের বার্তা ঘোষণা করিতেছে । বঙ্গদেশে এমন পল্লী নাই, যেখানে মুসলমানদের গৌরব ও পরাক্রান্ত অভিযানের কথা নাই, যেখানকার ধূলি পীর-দরবেশদের পদধূলি কিম্বা সমাধিতে পবিত্র হয় নাই । কতজন তাহার খবর রাখেন?
লেখক শ্রী দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৯৩৯) একজন শিক্ষাবিদ, গবেষক, লোক-সাহিত্যবিশারদ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার।
[সংগৃহীতঃ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মুসলিম অবদান, মোশাররফ হোসেন খান (সম্পাদিত),বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা, ১৯৯৮, পৃষ্ঠাঃ ২২-২৭]
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]