‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি কিভাবে হইল, এই প্রশ্ন প্রথমে জাগে মোগল ঐতিহাসিক আবুল ফজলের মনে। তিনি বলেন, “The original name of Bengal (Bangalah in the text) was Bang. Its former rulers raised mounds measuring ten yards in height and twenty in breadth throughout the province which were called el. From the suffix, this name Bengal (Bangalah) took its rise and currency”৪৯ ‘রিয়াজ-উস-সালাতীন’-এ এই অভিমত পুনর্ব্যক্ত করা হইয়াছে। ৫০ লক্ষ্য করার বিষয় এই যে আবুল ফজল দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন যে ‘বঙ্গা’ই ‘বঙ্গালাহ’ নামে রূপান্তরিত হইয়াছে। আধুনিক ঐতিহাসিকদের মধ্যে কেহ কেহ ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করেন। History of Bengal, Vol. 1. সম্পাদনার সময় রমেশচন্দ্র মজুমদারের মনে এই প্রশ্ন জাগে। তিনি লক্ষ্য করেন যে প্রাচীন বা প্রাক-মুসলিম আমলে ‘বাংলার কোন একক বা সাধারণ নাম ছিল না, ‘বাংলা’র বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। তিনি বলেনঃ “The geographical unity of Bengal, too, was not evidently fully realised in ancient times. No common name for the whole province was evolved, although the number of old regional names was gradually being reduced. Even upto the very end of the Hindu rule, Gauda and Vanga denoted not only two distinct geographical divisions but, to a certain extent, also two political entities.
“The absence of a common designation for the country or the people as a whole seems to show that inspite of the political unity for a long period under the Palas, and for shorter periods, under other dynasties,a united Bengali nation,as we understand it, had not yet probab;y come into existence, and there was a broad demarcation between Eastern and Western Bengal, traces of which persist, even today.”৫১
ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার নিজে ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করিয়াছেন। ষোল শতকের ইউরোপীয় লেখক, যেমন বারবোসা, ভারথেমা, বেঙ্গালা নামে একটি শহরের (City of Bengal) উল্লেখ করেন। গসতালদির মানচিত্রে (১৬৫১ খ্রীঃ), “The Travels of Cornelius de Bruyan”-এ সংযোজিত মানচিত্রে (১৭০১ খ্রীঃ), ব্লাভ (১৬৫০ খ্ৰীঃ) এবং সসেন-এর মানচিত্রে (১৬৫২ খ্ৰীঃ) বেঙ্গালা শহরকে চট্টগ্রাম এলাকায় চিহ্নিত করা হইয়াছে। এই বেঙ্গালা শহরের অস্তিত্ব এবং পরিচিতি নিয়া বিস্তর গবেষণা হইয়াছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন প্রশ্নেরই সমাধান হয় নাই। রেনেল প্রমুখ পরবর্তী ইউরোপীয় লেখক ‘বেঙ্গালা’ শহরের অস্তিত্ব খুঁজিয়া পান নাই। ১৬৮৯ খ্ৰীষ্টাব্দে ওভিংটন বলেন, “A late French geographer (Baudraud) has put Bengala into his Catalogue of imaginary cities, and such as have no real existence in the world.”৫২
আধুনিক ঐতিহাসিকদের মধ্যে এই বিষয়ে বিস্তর মতানৈক্য, কেহ বেঙ্গালা শহরকে সোনারগাও-এর সঙ্গে আবার কেহ চট্টগ্রামের সঙ্গে অভিন্ন মনে করেন; কেহ বলেন বেঙ্গালা শহরের অস্তিত্বই ছিল না, ‘বেঙ্গালা’র কোন একটি বড় শহরকে City of Bengala বলা হইয়াছে, ইহা কোন একটি বিশেষ বা নির্দষ্ট শহরের নাম নহে ; আবার কেহ বলেন, ‘বেঙ্গালা’ শহর সমুদ্রে বিলীন হইয়াছে। ঐতিহাসিকদের নিকট বেঙ্গালা শহরের পরিচিতি এমন একটি সমস্যা, যাহার সমাধান করা এখন আর বোধ হয় সম্ভব নয়।
ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার বেঙ্গালা শহরকে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত দিয়াঙ্গ এর সঙ্গে অভিন্ন মনে করেন। শুধু তাহা নহে, তিনি বলেন যে এই ‘বেঙ্গালা’ শহর হইতেই ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি হইয়াছে।৫৩ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে দিয়াঙ্গ একটি বিস্তীর্ণ এলাকা ; দিয়াঙ্গ পাহাড় এখনও কয়েক মাইল বিস্তৃত এবং এই পাহাড় ঘেঁষিয়া নদীর তীরে পর্তুগীজদের কুঠির এবং গীর্জা ছিল। সতর শতকের প্রথম দিকে সেবাষ্টিয়ান ম্যানরিক এই গীর্জায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন এবং এখান হইতেই তিনি পর্তুগীজদের পক্ষে ওকালতি করার জন্য আরাকানের রাজার নিকট যান। ম্যানরিকের বিবরণে দিয়াঙ্গ এবং চট্টগ্রামের অনেক উল্লেখ থাকিলেও একবারও বেঙ্গালা রূপে উল্লেখ পাই না।
‘বেঙ্গালা’ শহরের যাহারা উল্লেখ করিয়াছে তাহারা কেহ ষোল শতকের আগের লোক নয়, অথচ আমরা দেখিয়াছি যে চৌদ্দ শতকের মাঝামাঝি সময় হইতে মুসলমান ঐতিহাসিকেরা ‘বঙ্গ’কে ‘বঙ্গালা’ নামে অভিহিত করিয়াছেন। সুতরাং ডঃ মজুমদারের দেওয়া বেঙ্গালা শহরের পরিচিত সত্য হইলেও (অবশ্য সত্য বলিয়া মনে হয় না) বেঙ্গালা শহরের নাম হইতে ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি হইয়াছে বা বেঙ্গালা শহর প্রাচীন ‘বঙ্গালা’ দেশের সঙ্গে অভিন্ন, এই অভিমত নয়।
ডি. সি. সরকার বলেন, As Bengala (like the modern name Bengal) is a foreign corruption of Vangala a celebrated historian (Dr. Majumdar) has suggested that this late medieval city of Bengal (which he locates near modern Chittagong) was the capital of the ancient Vangala-desa and gave its name to the kindom, or vice versa, and in either case, the old kingdom of Vangla must be located in the region round the city…the above theories appear to be unwarranted.”৫৪
History of Bengal, Vol, I-এ ডঃ হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী ‘বঙ্গালা’-এর পরিচিতি দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু তথ্যের অভাবে বিষয়টি পাশ কাটাইয়া যান। তিনি ভাষার মারপ্যাঁচে বিষয়টির আলোচনা শেষ করেন, এবং মত প্রকাশ করেন যে ‘বঙ্গাল’ হইতে মোগল সুবা ‘বঙ্গালা’র নামকরণ হয়, ‘বঙ্গ’ হইতে নয়। তিনি ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আবুল ফজলের বক্তব্য উল্লেখ করেন এবং ইউরোপীয় লেখকদের বেঙ্গালা, শহরেরও উল্লেখ করেন, কিন্তু ‘বঙ্গালা’-এর ভৌগোলিক অবস্থিতি সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত দেন নাই।
ডঃ ডি. সি. সরকার ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি এবং ‘বঙ্গালা’ দেশের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেন। তিনি একজন প্রাচীন শিলালিপি এবং তাম্রলিপি বিশেষজ্ঞ, তাই তিনি প্রাচীন তাম্রলিপি বিশ্লেষণ করিয়া নূতন আলোক দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাষ্ট্রকূট তৃতীয় গোবিন্দের নেসারীলিপিতে (৮০৫ খ্ৰীঃ) ধর্মপালকে ‘বঙ্গাল’-এর রাজা বলা হয়। ইহার ফলে কেহ কেহ মনে করেন যে পাল রাজারা মূলত বঙ্গল-এর রাজা ছিলেন এবং পরে গৌড় ও মগধ অধিকার করেন। এই প্রশ্নটি বিতর্কিত, কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক বিধায় আমরা এই প্রশ্নে কোন মন্তব্য করিব না।
সাগরতাল লিপিতে ধর্মপালকে ‘বঙ্গাল’-এর রাজা এবং অমোঘবর্ষের সনজনলিপিতে গৌড়ের রাজা বলা হইয়াছে। এগার শতকে রাজেন্দ্র চোলের তিরুমালাই লিপিতে গোবিন্দচন্দ্রকে ‘বঙ্গাল’-দেশ-এর রাজা বলা হইয়াছে, আবার চন্দ্রবংশের লিপিতে ঐ বংশের রাজা ত্ৰৈলোক্যচন্দ্রকে চন্দ্রদ্বীপের রাজা বলা হইয়াছে। সুতরাং চন্দ্র রাজারা এক সূত্রে ‘বঙ্গাল’-এর রাজা, অন্য সূত্রে চন্দ্ৰদ্বীপের রাজা। অতএব ডি. সি. সরকার বলেন, “Candra-dvip and Vangala-desa thus appear to be more or less indentical. As Candra-divip is no other than the celebrated Bakla-Candra-dvip (i.e. parts of Buckergunge District and the adjoining region), the Buckergunge area was apparently included in Vangala-desa.”৫৫
আবার ‘বঙ্গ’-এর পরিচিতি সম্পর্কে ডি. সি. সরকার বলেন, “The Raghuvamsa reference to the defeat of the Vanga people in the land watered by the lower streams of the Ganges and epigraphic reference to Vanga comprising the Vikrampur region of Dhaka and Faridpur and to the Navya region of Vanga very probably in the Faridpur and Buckergunge districts, leave hardly any doubt that Vanga certainly included at least parts of of present Dhaka, Faridpur and Buckergunge Districts.”৫৬
‘বঙ্গ’ ও ‘বঙ্গাল’-এর পরিচিতি সম্পর্কে ডি. সি. সরকারের এই উক্তি দুইটির মধ্যে বিশেষ পার্থক্য খুঁজিয়া পাওয়া যায় না; বাকেরগঞ্জ ‘বঙ্গ’ এবং ‘বঙ্গাল’ উভয় জনপদেই অবস্থিত ছিল। ইতিপূর্বে ‘বঙ্গ’-এর আলোচনায় আমরা দেখিয়াছি যে বিশ্বরূপ সেন ও কেশব সেনের তাম্রলিপিতে বিক্রমপুর-ভাগ এবং নাব্য-ভাগ, অর্থাৎ ঢাকা, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ এলাকা নিয়া ‘বঙ্গ’ জনপদ গঠিত ছিল।
‘বঙ্গালা’-এর পরিচিতি সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত দিতে অপারগ হইয়া ডি. সি. সরকার ‘বঙ্গালা’কে সমুদ্রোপকূলে পাঠাইয়া দিয়াছেন। ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদারও একই কারণে ‘বঙ্গালা’কে ‘বেঙ্গালা শহর’-এ বা চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাঠাইয়া দেন।
অতি সম্প্রতি ঢাকার বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত এবং ডঃ আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রথম খণ্ডে সংযোজিত প্ৰথম মানচিত্রে সাগর উপকূলে একটি ক্ষুদ্র ভূখণ্ডকে ‘বঙ্গালা’ রূপে চিহ্নিত করা হইয়াছে। সম্পাদনা পরিষদ অবশ্যই ডি. সি. সরকারের দ্বারা প্রভাবিত হইয়াছেন, কারণ ঐ গ্রন্থে ডঃ . আবদুল মোমিন চৌধুরী রচিত ‘বাংলার ভৌগোলিক পরিচয়’ শীর্ষক অধ্যায়ে ইহার সমর্থন নাই। তিনি বলেন, ‘বঙ্গাল’-এর ব্যবহার মূলত দক্ষিণী লিপিতে। …তবে এই প্রসঙ্গে এ কথা বলা বোধ হয় খুব অযৌক্তিক হবে না যে বাংলার বাইরে-বিশেষ করিয়া দক্ষিণ ভারতে, ‘বঙ্গ’ ও ‘বঙ্গালা’ খুব একটা পৃথক চিন্তায় ব্যবহৃত হয় নাই। ‘বঙ্গ’ বলিয়া যে বিস্তৃর্ণ ভূভাগকে চিহ্নিত করা সম্ভব তাহাই ‘বঙ্গালা’ বলিয়া উল্লেখিত হইয়াছে, এই উল্লেখ যে খুব একটা বিশেষ অঞ্চল নির্দেশক ছিল এমন কথা জোর করিয়া বলা সম্ভব নয়।”৫৭
মুসলমান ঐতিহাসিকদের তথ্য বিশ্লেষণ না করিয়া ‘বঙ্গালা’র পরিচিতি দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ প্রাচীন লিপিতে একমাত্র নামোল্লেখ ছাড়া আর কোন বিবরণ নাই। পূর্ববর্তী ঐতিহাসিকেরা ধরিয়া নেন যে, যেহেতু ‘বঙ্গালা’ নামটি সারা মুসলমান আমলে পরিচিতি লাভ করে, যেহেতু প্রাচীন লিপিতে ‘বঙ্গাল’ এবং ‘বঙ্গালদেশ’-এর উল্লেখ পাওয়া যায়, এবং ইংরেজদের ‘বঙ্গাল’ ‘বঙ্গালা’রই পরবর্তী রূপ সেইহেতু ‘বঙ্গাল’ নামক একটি ভূভাগ ‘বঙ্গ’-এর কোন অংশে অবস্থিত ছিল এবং সেই ‘বঙ্গাল’ ভূভাগেরই পরবর্তী রূপ ‘বঙ্গালা’, ‘বেঙ্গাল’ ইত্যাদি।
‘বঙ্গাল’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আবুল ফজলের যেই ব্যাখ্যা ডঃ মজুমদার আমলই দেন নাই৫৮ সমুদ্রতটে দক্ষিণ বঙ্গের ছোট একটি এলাকা ‘বঙ্গালা’ রূপে চিহ্নিত করার জন্য ডি. সি. সরকার আবুল ফজলের সেই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “We have seen that the interesting mention of the earthen mounds, primarily meant for keeping off the encroachment of sea-water from the corn-fields, referes to a condition prevailing in the Buckergunge region of the coastal area of Bengal even today.”৫৯ কিন্তু বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি আলোচনা করিলে দেখা যায়, শুধু বাকেরগঞ্জ কেন, ঢাকা ফরিদপুরসহ বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এইরূপ বাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। ‘বঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে আবুল ফজলের উক্তি গ্রহণযোগ্য হউক বা না হউক, ষোল শতকে আবুল ফজল একটি যুক্তিসহ ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করিয়া ইতিহাস-সচেতনতার পরিচয় দেন।
সে যাহা হউক, মুসলমান ঐতিহাসিকদের তথ্য আলোচনায় আমরা দেখিয়াছি যে ‘বঙ্গ’ এবং ‘বঙ্গালা’ একই ভূভাগ, ‘বঙ্গ’ ‘বঙ্গালা’ রূপ লাভ করে। সোনারগাঁও অঞ্চল আক্রমণের সময় হইতেই ‘বঙ্গালা’ নামটি মুসলমান ঐতিহাসিকদের লেখায় স্থান পায় এবং সোনারগাঁও অধিকারের পরেই ইলিয়াস শাহ্কে ‘শাহ-ই-‘বঙ্গালা’ রূপে অভিহিত করা হয় এবং ইহার পর হইতেই ‘বঙ্গালা’ নামটি সারা ‘বাংলা’র জন্য প্রযোজ্য হয়। ডি. সি. সরকার যেই অঞ্চলকে ‘বঙ্গালা’ রূপে পরিচয় দেন এবং উপরোক্ত বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খণ্ডের প্রথম মানচিত্রে যেই স্থানে ‘বঙ্গালা’ চিহ্নিত হইয়াছে, সেই অঞ্চল মুসলমান অধিকারে আসে ইলিয়াস শাহের প্রায় একশত বৎসর পরে।
এখানে ‘বঙ্গালা’ নামাঙ্কিত আকবরের রাজত্বের ৩৯শ বৎসর ও তৎপরবর্তী সময়ের কিছু মুদ্রার উল্লেখ করা যায়। আকবরের সময় অবশ্যই ‘বঙ্গালা’ বা ‘বেঙ্গালা” নামক কোন শহরের অস্তিত্ব ছিল না, অন্ততপক্ষে, ঐ সময়ে কোন লেখক, দেশী বা বিদেশী, ‘বঙ্গালা’ নামক শহরের উল্লেখ করেন নাই। সেই কারণে মুদ্রাতত্ত্ববিদেরা মনে করেন যে যখন যেখানে আকবরের সময় সুবা বঙ্গালার রাজধানী বা প্ৰধান শাসনকেন্দ্র ছিল, সেইটিই ‘বঙ্গালা’। আকবরের রাজত্বের ৩৯শ বা তৎপরবর্তী বৎসরে আকবরনগর বা রাজমহল ছিল সুবা বঙ্গালার প্রধান শাসনকেন্দ্র, সুতরাং এই সময়ের মুদ্রার ‘বঙ্গালা’ রাজমহল। এই বিতর্কে না গিয়াও বলা যায় যে আকবরের মুদ্রার ‘বঙ্গালা’, আর যাহাই হউক, মজুমদার নির্দেশিত চট্টগ্রাম অঞ্চল বা সরকার নির্দেশিত বাকেরগঞ্জের সমুদ্রোপকূলের সঙ্গে চিহ্নিত হইতে পারে না, কারণ এই দুই অঞ্চলের কোনটিই আকবরের অধীনে ছিল না।
তথ্য নির্দেশ
৪৯. আইন-ই-আকবরী, ভল্যুম ২, জেরেট কর্তৃক অনূদিত, পৃ. ১২০। আবুল ফজলের ফার্সী লিখায় ‘বঙ্গালা’, ইংরেজ অনুবাদকের ভাষায় বেঙ্গল হইয়াছে।
৫০. রিয়াজ-উস-সালাতীন, আবদুস সালামের অনুবাদ, পৃ. ২০।
৫১. HBI, পৃ. ২১।
৫২. Bengal : Past and Present, Vol. XIII, পৃ.২৬২; Indian Historical Quarterly, Vol. XVI, পৃ. ২৩০, টীকা।
৫৩. Indian Historical Quarterly. Vol. XVI, পৃ. ২২৭-৩৫
৫৪. Studies, পৃ. ১৩১।
৫৭. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খণ্ড, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ১৯৮৭ পৃ. ২২।
৫৮. রমেশচন্দ্র মজুমদারঃ বাংলাদেশের ইতিহাস, ১ম খণ্ড, কলিকাতা, ১৯৪৭, পৃ. ২।
৫৯. Studies, পৃ. ১৪০
[উৎসঃ প্রফেসর আবদুল করিম, বাংলার ইতিহাসঃ সুলতানী আমল, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ঢাকা, ২০১৩, পৃ. ২৪-২৮]
*আবদুল করিম (১ জুন, ১৯২৮- ২৪ জুলাই, ২০০৭) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৭৩ – ১৯৭৫।
লিখেছেন; প্রফেসর আবদুল করিম
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]