১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার অংশ ছিল। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বতন্ত্র জেলার মর্যাদা লাভ করে। কালের প্রেক্ষাপটে এই পার্বত্য চট্টগ্রাম ভাগ হয়ে গঠিত হয় তিনটি প্রশাসনিক জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান। যদিও বিভিন্ন সময় কখনো ত্রিপুরা রাজার অধীন, কখনো আরাকান রাজার অধীন, কখনো মোগলদের অধীন এবং বঙ্গ প্রদেশের অংশ হিসেবে বৃটিশ শাসনাধীন ছিল। পৃথিবীতে জাতিগত বৈচিত্রে সৃষ্টি হয়েছে অনেক দেশ। আদি বাংলার অঙ্গভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামে অতীতে এমন কোন জাতি ছিল না যে, এটি তাদের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসাবে রূপ নিতে পারবে। পার্বত্য এলাকায় অবস্থানরত বাঙ্গালীরা বহিরাগত হলে শান্তিচুক্তি পক্ষীয়দেরও বহিরাগত অভিধায় পড়তে হবে। ইতিহাস তার প্রমাণ দেবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাশাপাশি অবস্থিত ত্রিপুরা রাজ্য, আসাম ও তার উত্তরাঞ্চল, লুসাই বা মিজোরাম অঞ্চল এবং মায়ানমার বা বার্মা থেকে উপজাতীয়রা আদি বাংলার অঙ্গভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় ঢুকে পড়েছে। যা তাদের ভাষা নৃতাত্তিক গঠন প্রভৃতিরই স্বাক্ষর বহন করে থাকে।
ইতিহাসকে ভুলে কেউ সামনে অগ্রসর হতে পারে না। সুতরাং বাঙ্গালীদেরকে বহিরাগত বলে পাহাড়ি নেতাদের দাবী পূরণ করে পাহাড়ি-বাঙালী সম্পর্কে আদৌ কোন সমাধানে পৌঁছানো যাবে না। বাস্তবতার নিরিখে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। পার্বত্য এলাকায় বিরাজমান সমস্যা একটি জাতীয় ইস্যু। এটিকে ছোট করে বা হেলাফেলা করে দেখার সুযোগ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং এর সমাধানের প্রক্রিয়ার প্রতি সমগ্র জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ। এ সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। পার্বত্য জনগণ ও রাষ্ট্রশক্তির মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা, সমস্যা সমাধানে পাহাড়ি নেতাদের ঔদ্ধ্যত্যপূর্ণ ব্যবহার, বাঙ্গালী বিদ্বেষী মনোভাব, সর্বোপরি পারস্পরিক আস্থার অভাব এবং সমতলভূমির সাথে পাহাড়ি জনগণের জীবন-জীবিকা, সামাজিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সৃষ্ট ব্যবধানের পরিণতিই বর্তমান সংকটের কারণ।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ৫৯০ হতে ১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বর্তমান পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের রাজাগণ আটবার, আরাকান রাজ্যের রাজাগণ নয়বার এবং গৌড়ের মুসলিম সুলতানগণ ছয়বার এ এলাকার কর্তৃত্ব করেন। অবশেষে বর্তমান পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের রাজার শাসন ক্ষমতার আওতা হতে মুসলিম শাসক সুলতান ফকরুদ্দিন মোবারক শাহ্ চট্টগ্রামসহ এ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন। মুসলিম শাসনের ধারাবাহিকতায় ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক বাংলার মসনদ দখল পরবর্তীকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাজস্ব ও প্রশাসনিক নির্বাহী ক্ষমতা ইংরেজ সরকারের হাতে ন্যস্ত হয়ে যায়।
আরাকানী উপজাতিদের আগমন সম্পর্কে ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন তারিখে আরাকানী রাজা কর্তৃক চট্টগ্রামের চীফের প্রতি লেখা একটি চিঠি হতে কিছু চমকপ্রদ ঐতিহাসিক তথ্য জানা যায়। আরাকান রাজ্য হতে পালিয়ে আসা কিছু উপজাতির নাম রাজা উল্লেখ করেছিলেন, যারা চট্টগ্রামের পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছিল এবং উভয় দেশের জনগণের উপরই অত্যাচার করতো। এই চিঠিতে পার্বত্য অঞ্চলে বর্তমানে বসবাসরত অন্ততঃ চারটি উপজাতির নাম উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন- মগ, চাকমা, ম্যারিং বা মুরং এবং লাইস (পাংখু, বনযোগী)। আরাকানী রাজা চেয়েছিলেন যে, এ সকল দস্যুদেরকে পার্বত্য এলাকার হতে বিতাড়িত করা উচিত যাতে ‘‘আমাদের বন্ধুত্ব নিষ্কলঙ্ক থাকে এবং পর্যটকদের ও ব্যবসায়ীদের জন্য রাস্তা নিরাপদ থাকে।’’
পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় তৎকালীন সময়ে যতগুলো অধিবাসী বসবাস করত, তার মধ্যে কুকিরা ছিল সবচেয়ে বর্বর ও নির্দয়। নরহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি ছিল তাদের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। যে যত বেশী নরহত্যা করতে পারত, সমাজে তার সম্মান ছিল ততবেশী। এ কুকি সম্প্রদায়ের লোকেরা কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে বর্তমান রাঙ্গামাটি জেলায় বসবাস করত। তারা মোট ১০টি গোত্রে বাস করত। প্রতি গোত্রে একজন নেতা থাকত। এ নেতার ভরণ পোষনের দায়িত্ব ছিল গোত্রের সকলের উপর। তারা জুমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করত। এই জুমচাষ করার জন্য ২/১ বছর একস্থানে থাকার পর পুনরায় নতুন জুমের স্থানে দল বেধে চলে যেত। জুমচাষের জমি নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে বিবাদ হত এবং সকল রকম বিবাদের পরিণিতি ছিল শেষ পর্যন্ত হত্যা। এ হত্যাকান্ড একজনের উপরই সীমাবদ্ধ থাকত না। বরঞ্চ হত ব্যক্তির পরিবারের নারী বা শিশু কাকেও হত্যাকান্ড হতে বাদ দেয়া হত না। পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করা সন্তানগণের নিকট ধর্মীয় বিধান হিসেবে পরিগণিত হত। সে কারনে প্রতিশোধ নেয়ার মত যোগ্য কাকেও জীবিত রাখা হত না। বৃটিশ শাসনামলে উপজাতীয় কুকীরা বৃটিশ প্রজাদের উপর প্রকাশ্যে অত্যাচার করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ আক্রমণের ঘটনা এতই বড় ধরণের ছিল যে, সরকারের জন্য ইহা খুবই উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ঘটনার ফলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি তরান্বিত হয়। অত্যাচারী উপজাতিদের আক্রমণের পরিণতিতে এবং উপজাতি আন্দোলন দমনের জন্য ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে বিভাগীয় কমিশনার পাহাড়ী উপজাতিদের জন্য একজন সুপারিনটেনডেন্ট নিযুক্ত করে পার্বত্য অঞ্চলকে রেগুলেশান জেলা চট্ট্র্রাম হতে পৃথক করার সুপারিশ করেন। সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের ২২নং আইন দ্বারা ঐ বছরের ১লা আগস্ট তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে পৃথক করা হয় এবং একজন অফিসারকে পার্বত্য উপজাতিদের জন্য সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিযুক্ত করা হয়। এভাবেই জেলার সিভিল, ক্রিমিনাল এবং রাজস্ব আদালত ও কর্মকর্তাদের অধিক্ষেত্র হতে পাহাড়ী ও বনাঞ্চলকে আলাদা করা হয়। একজন হিল সুপারিনটেনডেন্ট নিয়োগের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তার অধিক্ষেত্রের মধ্যে অত্যাচারী উপজাতিদের প্রতিরোধ করা এবং নিরীহ উপজাতিদের রক্ষা করা। তার অধীনস্থ পাহাড়ী এলাকাকে তখন হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে অভিহিত করা হয়। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার অফিসার ইন চার্জ এর পদবী সুপারিনটেনডেন্ট হতে পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসক বা ডেপুটি কমিশনার করা হয় এবং সমগ্র পার্বত্য অঞ্চলের রাজস্ব ও বিচার ব্যবস্থার যাবতীয় বিষয়ে তাকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
বৃটিশ শাসন কালে উপজাতীয় কুকীদের দ্বারা ১৮৫৯, ১৮৬৬, ১৮৬৯, ১৮৮৮ ও ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে পার্বত্য চট্টগ্রামে লুন্ঠনের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং বৃটিশ প্রজাদের উপর প্রকাশ্যে অত্যাচার করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ আক্রমণের ঘটনা এতই বড় ধরণের ছিল যে, সরকারের জন্য ইহা খুবই উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ব্রিটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসন ও রাজস্ব সংগ্রহের সুবিধার্থে ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে ১লা সেপ্টেম্বর মং, চাকমা ও বোমাং নামে তিন সার্কেলে বিভক্ত করে। রাঙামাটির ১৬৫৮ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানের ১৪৪৪ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে বোমাং সার্কেল এবং রামগড়ের ৬৫৩ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে মং সার্কেলে বিভক্ত করা হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৯৪ সালে ফ্রন্টিয়ার প্রটেকশন ফোর্স গঠন করে। ১৭৯৫ সালের ২৯ জুন এর নাম পরিবর্তন করে (বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায়) রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন করা হয়। কালের বিবর্তনে এই বাহিনী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ধারন করেছে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রন্টিয়ার গার্ডস, ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ, ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেল্স, ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল্স, ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ রাইফেল্স, সর্বশেষ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি নামকরণ করা হয়। বার্মা ও ভারত থেকে বহিরাগত উপজাতিদের পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার স্রোত বন্ধ করা, পাহাড়ী বনদস্যুদের হাত থেকে নিরীহ বাঙালীদের রক্ষা করা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য রামগড়ে এই বাহিনীর আতœপ্রকাশ ঘটে। তৎকালীন সময় থেকেই বহিরাগত উপজাতীয়দের উপদ্রব মারাত্নক আকার ধারণ করেছিল বিধায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে এই বাহিনী গঠন করতে বাধ্য হয়েছিল। বিজিবির কর্মপরিধি বাড়লেও উপজাতীয় জনস্রোত পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারেনি, ঠিক যেমনটা পারছেনা রোহিঙ্গা জনস্রোত রোধ করতে। বর্তমানে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বভৌম রক্ষার দায়ীত্বে থাকা সেনাবাহিনীকে আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উপজাতীয়দের চাপে প্রত্যাহার করতে হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান স্বীকৃতের দাবীদার বিজিবিকে হতে হচ্ছে একের পর এক হামলার স্বীকার। পুলিশ নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা। র্যাব নিয়ে চলছে অপপ্রচার, আন্দোলন। বসবাসরত স্থানীয় বাঙালী নিধনে নেয়া হচ্ছে মহা পরিকল্পনা।
বৃটিশ শাসন কালে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয় কুকীদের প্রকাশ্যে অত্যাচার, হত্যাযজ্ঞ ও লুন্ঠনের কারনে তাদের পার্বত্য অঞ্চলে চলাচল বা উপজাতি সম্প্রদায়ের বসবাসের নিয়ন্ত্রন আনয়নের জন্য ব্রিটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিমালা ১৯০০ প্রনয়ন করেন। রেগুলেশান ১৯০০ এর ১৮ ধারা অনুযায়ী একই বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিমালা জারি হয়। এ বিধিমালার ৩৪ বিধি অনুযায়ী পার্বত্য জেলাগুলোতে ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে। ৩৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনো ধরনের জমি বন্ধক, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবর্তন এবং অধিগ্রহণ জেলা প্রশাসকের এখতিয়ার ভুক্ত। যার অর্থ হচ্ছে জেলা প্রশাসকই হচ্ছে জমির প্রকৃত মালিক। ম্যানুয়েল অনুযায়ী সার্কেল প্রধান এর অধীনস্থ হেডম্যান এবং কারবারিরা মৌজা এবং পাড়ায় রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত, যা সংগ্রহের পর সার্কেল প্রধান কর্তৃক জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রকৃতপক্ষে তিন সার্কেল প্রধান এবং তাদের অধীনস্থ হেডম্যান এবং কারবারিরা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারের নির্দিষ্ট প্রতিনিধি। ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সার্কেল প্রধানদের ওপর কর্তৃত্ব করে থাকেন। ৫১ বিধিতে জেলা প্রশাসককে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়। এই বিধি অনুযায়ী, “অত্র জেলার বাসিন্দা নন এমন কোন ব্যক্তির উপস্থিতি জেলার সুশাসন এবং শান্তির জন্য ক্ষতিকর মর্মে জেলা প্রশাসক সন্তুষ্ট হইলে, এতদ্বিষয়ে লিখিত কারন উল্লেখ পূর্বক তিনি যদি, অত্র জেলার মধ্যে থাকেন তাহা হইলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জেলা ত্যাগ করিবার জন্য এবং জেলার বাহিরে থাকিলে অত্র জেলায় তাহার প্রবেশ নিষিদ্ধ করিয়া আদেশ জারী করিতে পারিবেন। এই বিধির অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ অমান্য করিলে বা অবহেলা করিলে সেই ব্যাক্তি দুইবছর পর্যন্ত কারাদন্ডে বা জরিমানা দন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন”।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিমালা ১৯০০ কার্যকর করার মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলার সার্কেল প্রধানদের রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সার্কেল চীফকে রাজস্ব আদায়ের এবং নিজ নিজ এলাকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সার্কেলগুলো নিয়ে জেলাকে তিনটি মহকুমায় (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও রামগড়) বিভক্ত করা হয় এবং মহকুমা প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। তাদেরকে সার্কেল চীফের কার্যাবলী তদারকী ও লিঁয়াজো করার দায়িত্ব দেয়া হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিমালাকে একটা অন্যতম দলিল হিসেবে পাহাড়িরা গণ্য করে থাকে, যদিও ওই বিধিমালার বেশির ভাগ ধারা ছিল উপজাতীয়দের জন্য অবমাননাকর। বিধি অনুসারে গোটা পার্বত্য জেলার বিধাতা বনে যান জেলা প্রশাসক বা ডেপুটি কমিশনার। যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে ইংরেজ কতৃক নিযুক্ত হবেন। সেখানে পার্বত্য অঞ্চলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে যেতে বা বসতি স্থাপন করতে পারবে না। কিন্তু কেন নিষিদ্ধ ছিল, তা উপজাতি অ্যাক্টিভিস্ট কিংবা সুশীল দরদীরা উল্ল্যেখ করেন না। এই বাক্যটি উপজাতি নেতারা খুব সচেতনভাবে এড়িয়ে যান।
এই বিধিমালায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে ওই এলাকার বাসিন্দাদের নাগরিক অধিকার বঞ্চিত আশ্রিত জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া তাদের ভূমি অধিকার ছিল না। উপজাতীয় কারবারিদের শুধু যাযাবর জুম চাষের পাঁচসালা বিলি ব্যবস্থা ও বন্য প্রাণী রক্ষণাবেক্ষণের ভার দেয়া হয়। বাঙালিদের দেখাদেখি খুবই সামান্য সংখ্যক উপজাতীয় হালচাষ রপ্ত করে। বিধিমালায় স্পষ্ট করে লেখা ছিল উপজাতীয়রা পঁচিশ বিঘা জমি ব্যাবহার করতে পারবে, কিন্তু জমির মালিক হতে পারবে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ প্রতিনিধি লর্ড কর্ণওয়ালিশ কর্তৃক ভারত উপমহাদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা কার্যকরী থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন উপজাতীয় প্রধানকে জমিদারি স্বত্ব দেয়া হয়নি। শুধু সার্কেল চীফ বা রাজা খেতাব দিয়ে তাদের খুশি রাখা হয়েছিল। সার্কেল চীফ বা রাজার ক্ষমতা ছিল কেবল খাজনা আদায় করার। তখনকার সময় এর আর্থিক মূল্য থাকলেও এখন সেই মূল্য নামে মাত্র। নামে মাত্র মূল্যের সেই খাজনা এখনও রাজপরিবার আদায় করেন।
পার্বত্য এলাকা ‘নন-রেগুলেটেড এরিয়া’ বা ‘অনিয়ন্ত্রিত’ এলাকা হিসেবে ঘোষিত হয়, যেখানে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যাতিত কেউ প্রবেশ করতে কিংবা বসতি স্থাপন করতে পারবে না। উপজাতীয়রা পঁচিশ বিঘা জমি ব্যাবহার করতে পারবে, কিন্তু মালিক হতে পারবে না। বিচারালয়ে কোন উকিল থাকবে না। সার্কেল চীফ (রাজা), হেডম্যান ও কারবারিরা থাকবে। দরকার হলে উপজাতীয়রা বিনা পারিশ্রমিকে সরকারি কর্মকর্তাদের চাহিদা মোতাবেক কাজ করে দিতে বাধ্য থাকবে। সার্কেল চীফ (রাজা), হেডম্যান এমনকি কারবারিরাও তাঁর অধীনস্থ উপজাতীয়দের খাটাতে পারবে কোন পারিশ্রমিক না দিয়েই। এই বিধিগুলো সাধারন পাহাড়িদের উপকার করবে, নাকি এলিটদের?
পার্বত্য চট্টগ্রামে অ-উপজাতি বাঙালিদের দেয়া হয় হাট-বাজারের দায়িত্ব (সূত্রঃ শরদিন্দুর চাকমা, মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রাম)। এ জন্যই পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ক্ষুদ্র পরিমান উন্নয়ন হয়েছে, দেশের অন্যান্য অংশের সাথে যেই ক্ষুদ্র হলেও তাল মিলিয়ে চলতে ফিরতে পারছে এই অঞ্চল, তার প্রায় সিংহভাগ কৃত্তিত্ব বাঙালিদের। আইনী দিক বিবেচনায় বলতে হয়, ১৯২০ সালে স্বয়ং ব্রিটিশ সরকার উপজাতীয় কুকীদের নিয়ন্ত্রনে এনে পার্বত্য চট্টগ্রামকে এক্সক্লুসিভ এরিয়া ঘোষণা দিয়ে সেখানে বহিরাগতদের আগমন প্রক্রিয়া সহজ করেছিল। এই বিধিমালা যারা প্রনয়ন করেছিল তারাই এই বিধিমালার মধ্যে যেই বিশেষ বিধিটির প্রতি বর্তমানে পাহাড়ি নেতাদের প্রচন্ড আগ্রহ তা বাতিল করেছিল। এমনকি পাকিস্তান সরকার সাধারন পাহাড়িদের স্বার্থে এই বিধিমালাই একবার বাতিল করেছিল, পরে বিভক্তি আনয়নের জন্য এটি আবার চালু করে।
পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর রাঙ্গামাটি/খাগড়াছড়ি/বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ১৯, ২০ ও ২১নং আইন) সংশোধিত রাঙ্গামাটি/খাগড়াছড়ি/বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ৯, ১০ ও ১১নং আইন) কার্যকর হওয়ার পর ৬৪ ধারায় (শান্তি চুক্তির খ খন্ডের ২৬ ধারা) পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট ভূমি সংক্রান্ত যে কোন ক্রয়-বিক্রয়, পরিবর্তন বা অধিগ্রহণের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ কার্যকর থাকায় ভূমি সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। ২রা ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে অত্র এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয় এবং ভূমি সমস্যাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য সবাই নিজ জমির ওপর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে আগ্রহী হলে বিভিন্ন জায়গায় জাতিগত সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
যেহেতু সাম্প্রতিক কালে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো ভূমি জরিপ হয়নি, তাই এ অঞ্চলের মোট ভূমির পরিমাণ নিরূপণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, পার্বত্য এলাকার মোট জমির পরিমাণ ৫০৯৩ বর্গমাইল, যার মধ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ৭৭৫.৬৩ বর্গমাইল, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ১৪২৩ বর্গমাইল এবং অশ্রেণীভুক্ত রাষ্ট্রীয় বন ২৮৯৪.৩৭ বর্গমাইল। উল্লেখ্য, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিল এবং সরকারি অধিভুক্ত জমি শান্তি চুক্তির আওতাধীন নয়। তিন জেলার ব্যক্তি মালিকানাধীন সর্বমোট জমির পরিমাণ হচ্ছে ১৪২৩ বর্গমাইল। বাকি ৩৬৭০ বর্গমাইল এলাকা সরকার নিয়ন্ত্রিত সম্পত্তি। শান্তি চুক্তি অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে ভূমি সংক্রান্ত যে কোন ক্রয়-বিক্রয়, পরিবর্তন বা অধিগ্রহণের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যবিধি চূড়ান্তকরণে বিলম্ব এবং চেয়ারম্যানের অনাগ্রহের কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে একসঙ্গে জেলা প্রশাসন, পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং সার্কেল প্রধান নিয়ন্ত্রিত প্রচলিত পদ্ধতি দ্বারা ভূমি ব্যবস্থাপনা চলছে। জেলা প্রশাসক সার্কেল প্রধানের পরামর্শ ক্রমে হেডম্যান নিয়োগ দেন। সার্কেল প্রধানের অধীনে থেকে হেডম্যান তার মৌজার ভূমি এবং জুমচাষ থেকে রাজস্ব আদায় করে। ভূমি প্রশাসন বিশেষত ভূমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময় সাপেক্ষে ব্যাপার, যার ফলে দেখা যায় সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে অনেকে মৃত্যুবরণ করে বা ক্ষেত্র বিশেষে আবেদনপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে অনেকেই অবৈধভাবে ক্রয়, বিক্রয়সহ অননুমোদিত ভাবে ভূমির মালিক হয়ে থাকে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী ও প্রতারক নিজ নামে ভূমি নিবন্ধন করে নিরীহ জনগোষ্ঠীকে প্রতারিত করছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত দাঙ্গার জন্ম দিচ্ছে। অবৈধভাবে জমি দখল না করলে জমির মালিক হওয়া কঠিন- এমন বাস্তবতা পার্বত্যাঞ্চলে বিতর্ক এবং সংঘর্ষের জন্ম দিচ্ছে। এ ধরনের জটিল প্রক্রিয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি জটিলতা দীর্ঘসূত্রতা লাভ করছে।
উপজাতি সম্প্রদায় বিশ্বাস করে জমি, বন এবং পাহাড় হচ্ছে যৌথ সম্পত্তি। তাই সরকারিভাবে প্রচলিত ভূমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আর উপজাতিদের বংশানুক্রমিকভাবে প্রচলিত ব্যবস্থাপনার মধ্যে তফাৎ রয়েছে। চাকমারা মনে করে এ অঞ্চলের ভূমি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। তাদের আবাসভূমি ছাড়া বাকি সব জমির ওপর যৌথ মালিকানা বহাল। চাকমা সম্প্রদায় মনে করে, যে কেউ যে কোনো জমিতে আবাস করতে পারবে এবং এর জন্য কোনো চুক্তি বা কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই। ভূমির মালিকানা এবং ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন উপজাতি বিভিন্ন ধারণা পোষণ করে থাকে। চাক উপজাতি মনে করে অন্য কেউ আগে ব্যবহার না করলে, যে কোনো জমি চাষাবাদের জন্য ব্যবহার করা যাবে। কিয়াং জনগোষ্ঠী মনে করে সন্তান ও জমি হচ্ছে প্রকৃতির দান এবং প্রত্যেকের জমির ওপর সমান অধিকার রয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির উন্মেষ ঘটলেও উপজাতি সম্প্রদায় এখনো জমির ব্যাপারে তাদের সনাতনী চিন্তাভাবনা আঁকড়ে ধরে আছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ এর ৪২ ধারা অনুযায়ী জুম চাষের জন্য মালিকানার দরকার হয় না। ফলে উপজাতীয়রা নিবন্ধন ছাড়াই জমিতে বসবাস এবং চাষাবাদ করতে পারে এবং সার্কেল প্রধানকে খাজনা দিয়ে তারা নতুন জমির মালিকানা লাভ করতে পারে। বাস্তবতার নিরিখে উপজাতি সম্প্রদায়ের এই উপলব্ধি আধুনিক সময়োপযোগী মাত্রা পাবে এটাই কাম্য।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা হিসেবে ঘোষিত হবার পর থেকে অর্থাৎ ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের ২২নং আইন, ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ৪নং আইন এবং ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩নং বিধি ও ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের ৩নং বিধি অনুসারে শাসিত হতো। ১লা মে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে ব্রিটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ নামে আরও একটি আইন জারী করে। উক্ত আইন মূলে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলা শাসিত হয়ে আসছে। উল্লেখ্য, ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন পাশ হলেও ১৯০০ সালের উক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি-আইন এ অঞ্চলে অব্যাহত থাকে। যাতে অন্য জেলা থেকে আগত অ-উপজাতীয়দের, এ জেলায় জমি বন্দোবস্ত পাবার ব্যাপারে কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ রাজত্বকালে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে Excluded Area, ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে Tribal Area ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ বাতিল হয়ে এ অঞ্চল সাধারণ এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল। পরবর্তীতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার এক নির্বাহী আদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ পুনর্ববহাল করত: এ এলাকাকে Tribal Area নামে ঘোষণা প্রদান করে। এ সময় তৎকালীন সরকার কর্তৃক অত্র এলাকায় বাঙ্গালী ও উপজাতীয়দের মধ্যে জনসংখ্যার ভারসাম্য আনয়নের প্রচেষ্টায় উক্ত বিধির ব্যাপক সংশোধনের মাধ্যমে বাঙ্গালীদের এ অঞ্চলে জমির মালিকানা লাভের পথ সুগম করে দেয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে সংশ্লিষ্ট উপজাতীয়দের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতাত্তোরকালে বিভিন্ন সময়ে সরকার উপজাতি ও বাঙ্গালীদের মধ্যে জনসংখ্যা সংক্রান্ত ভারসাম্য আনয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।
পরের পর্ব: পর্ব - ২
পর্ব - ৩
পর্ব - ৪
পর্ব - ৫
পর্ব - ৬
পর্ব - ৭
পর্ব - ৮
পর্ব - ৯
পর্ব - ১০
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]