পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙ্গালী বিতাড়নে সিএইচটি কমিশন ষড়যন্ত্রের নতুনমাত্রা যোগ করেছে। সিএইচটি কমিশন সরকারের নিকট বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে। সরকারের নিকট প্রেরিত এইসব সুপারিশমালায় উল্লেখ করেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীরা অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে। এই দূর্ভোগ লাঘবে বাঙ্গালীদের পার্বত্যাঞ্চলের বাইরে পুনর্বাসন করা গেলে তাদের এই অসহনীয় দুঃখ কষ্টের পরিসমাপ্তি ঘটবে। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর লোকসংখ্যার চাপ হ্রাস পাবে। অবশ্য এই ক্ষেত্রে বাঙ্গালীরা স্বেচ্ছায় পার্বত্য চট্টগ্রাম না ছাড়লে রেশনসহ তাদের সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিতে হবে (সূত্র দৈনিক ইনকিলাব)। কমিশনের ধারণা, এতে বাঙ্গালীরা স্বেচ্ছায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে চলে যাবে। সমস্যা আমাদের, মাথা ব্যাথা তাদের। আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে বিদেশী এ সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙ্গালীদেরকে বহিস্কার করতে সরকারের কাছে এই ফর্মূলা উপস্থাপন করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাঙ্গালীসহ বিভিন্ন উপজাতীয় সম্প্রদায়গুলো কিভাবে বসতি স্থাপন করেছে তা কারও অজানা নয়। ১৮৮০ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালীরা স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে শুরু করে এবং লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ করতে আরম্ব করে (সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, পৃষ্ঠা- ১৫৮)। ব্রিটিশ শাসনকালে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে Excluded Area, ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে Tribal Area, ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ বাতিল করে এ অঞ্চল সাধারণ এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল। পরবর্তীতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার এক নির্বাহী আদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশান ১৯০০ পুনর্ববহাল করত: এ এলাকাকে Tribal Area, নামে ঘোষণা প্রদান করে। এ সময় তৎকালীন সরকার কর্তৃক অত্র এলাকায় বাঙ্গালী ও উপজাতীয়দের মধ্যে জনসংখ্যার ভারসাম্য আনয়নের প্রচেষ্টায় উক্ত বিধির ব্যাপক সংশোধনের মাধ্যমে বাঙ্গালীদের এ অঞ্চলে জমির মালিকানা লাভের পথ সুগম করে দেয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। স্বাধীনতাত্তোরকালে বিভিন্ন সময়ে সরকার উপজাতি ও বাঙ্গালীদের মধ্যে জনসংখ্যা সংক্রান্ত ভারসাম্য আনয়নের প্রেক্ষিতে সমতল জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের নদীভাঙ্গা ভূমিহীন, দিন মজুর, অসহায় দুঃস্থ পরিবারগুলোকে এনে সরকারী খাস ভূমিতে যেখানে হিংস্র জীবজন্তু বসবাস করত সেখানে পুর্নবাসন করা হয়। এই পুর্নবাসনের পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসীরা সরকারের উপর প্রতিশোধ নিতে পুর্নবাসিত বাঙ্গালীদের উপর অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালায়। কোলের শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত রেহাই পাইনি তাদের ব্রাশ ফায়ার থেকে। অনেককে দেয়া হয়েছে জীবন্ত কবর, পিতার সামনে মেয়েকে এবং স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাদের অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা এতই ভয়াবহ ছিল যে, পাকিস্তানীদের শোষনকেও হার মানিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা ও উপজাতি সন্ত্রাসীর এ প্রক্রিয়া রোধ করতেই তৎকালীন সরকার বাধ্য হয় বাঙ্গালীদেকে স্ব-স্ব বসতভিটা, বাগান বাগিচা থেকে তুলে এনে গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দী শিবিরে আটক করতে। এ প্রক্রিয়ায় তৎকালীন ১০৯টি বাঙ্গালী গুচ্ছগ্রামে ৩১ হাজার ৬২০ পরিবারের ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৭ জন বাঙ্গালীকে (বর্তমানে ৬,৫০,০০০ এরও বেশি )। সেই খানেও হামলা থামেনি। চুতর্দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টি করে ছোট্ট গুচ্ছগ্রামে সরকার পরিবার প্রতি একটি ২০ ফুট বাই ২০ ফুট বন্দী কুটিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শুরু হয় গুচ্ছগ্রাম বাসীদের জীবন-জীবিকা। এতে বাঙালিরা নিরাপত্তা পেলেও তাদের বসত ভিটা ও চাষের জমি হারাতে হয়। সেই আশির দশকের শেষভাগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাঙালিরা আর তাদের সেই বসত ভিটা, বাগান বাগিচা ও আবাদী জমি ফেরত পায়নি। প্রতিবছর খাজনা দিয়ে ডিসি অফিসের খাতায় জমির দখল সত্ত্ব বহাল রাখলেও তাতে বসত করা, আবাদ করা সম্ভব হয় না। কারণ জমিতে চাষাবাদে গেলেই পাহাড়িরা তাদের উপর হামলা করে। পাহাড়ীদের মতে, পাহাড়ের সকল জমিই তাদের। বাঙালীদের অনেক জমি পাহাড়িরা দখল করে নিয়েছে। কোনো জমি দখল করে উঠেছে কিয়াং, মন্দির, গীর্জা যা সরানোর ক্ষমতা বাঙালি তো দূরের কথা রাষ্ট্রের পক্ষে দুঃসাধ্য। কারণ সে দিকে চোখ দিলেই ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন, থাইল্যান্ড,কুবিয়া,বার্মা, ইন্ডিয়াতে মিছিল শুরু হয়ে যাবে সাথে সাথে। বাঙালিদের ভূমিহীন করার কৌশল হিসাবে তাদের জমির খাজনা আবার পাহাড়ি হেডম্যানরা নেয় না, ডিসি অফিসে দিতে হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]